Yamaha R15 V3 Indian Version Dual ABS ৩৭,০০০ কিলোমিটার রাইড - সোহেল

This page was last updated on 22-Nov-2022 03:46pm , By Raihan Opu Bangla

আমি সোহেল রানা । আমার বাসা নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানায় । আমি বর্তমানে Yamaha R15 V3 Indian Version মডেলের একটি বাইক ব্যবহার করছি, আমি আমার বাইক নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।

Yamaha R15 V3 Indian Version Dual ABS ৩৭,০০০ কিমি রাইড

  

বাইক ভালোবাসি,কারন আমি আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে এবং ট্যুর করতে ভালবাসি,আর ট্যুরের ক্ষেত্রে বাইক আমার কাছে পছন্দের মাধ্যম। আমার নামে প্রথম কেনা বাইক ছিল Yamaha Fazer সেটা ছিল 2014 সালে, বাইকটি আমি দীর্ঘ চার বছর ব্যবহার করেছি। আমি বাইক চালানো শিখেছিলাম ২০০৬ সালে। আমার মামার Dayang 80 বাইকটি দিয়ে । আমি ছোটবেলা থেকে সাইকেল ভালো চালাতাম একদিন হঠাৎ করে মামার মোটরসাইকেল নিয়ে চেষ্টা করতেই একটু একটু করে শিখে গেছি, এরপর থেকেই যার বাইক পেতাম সুযোগ পেলে একটু চালাতাম।

এভাবেই ২০১০ সাল পর্যন্ত চললো, এরপর SSC পরীক্ষায় পাশ করে পড়াশোনার জন্য রাজশাহীতে চলে গেলাম ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত থাকলাম। তারপরে আসলো সেই শুভ দিন, যখন থেকে বাইক সম্পর্কে বুঝতে শিখেছি তারপর থেকেই ইয়ামাহা বাইকের প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক বেশি ছিল। 

 ২০১৪ সালের দিকে আমি বাড়িতে আসার পরে বাবার ব্যবসায়ীক কাজে বাইকের প্রয়োজন খুব বেশি ছিল, তখন যেকোনো একটা বাইক হলেই চলবে এমন অবস্থা। তারপরে বাইক কেনার জন্য আমি আমার দাদী আমার আংকেল এবং এক বড় ভাই আর আমার বন্ধু গিয়েছিলাম, তখন সুজুকির নতুন একটি মডেল জিক্সার শোরুমে ছিল, আমার তো দেখে ওইটাই পছন্দ কারন ইয়ামাহা এফ জেড এর কাছাকাছি মডেল জিক্সার। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমার দাদীর এবং বাবার সেই বাইকটা পছন্দ না, দাদী বলে এতে একজনের বেশি দুইজন ওঠা যাবে না সিট কেমন যেন। পরবর্তীতে আমার খুব রাগ হলো আমি শোরুম থেকে চলে গেলাম, পরবর্তীতে আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গেল। তখন জিক্সার এর নীল রং এর বাইকটা পছন্দের ছিল, ওই বাইকটার  জন্য 2 লাখ 35 হাজার টাকা কাউন্টারে জমা দিলাম। গাড়ি কেনার প্রসেস প্রায় শেষের দিকে যখন কালার জিজ্ঞেস করছে কোন কালার, বলছি নীল কালার কিন্তু ইয়ামাহা শোরুম থেকে বলছে নীল কালার স্টক আউট। একটা ছিল সেটা আগেই বিক্রি হয়েছিল। তখন বাইক না নিয়ে টাকা ফেরত নিলাম, তারপরে সবার সাথে কথা বলে ভাবলাম লাল আর নীল যেকোনো একটা হলেই হয়। যেহেতু লাল আছে তাহলে এটা নিয়ে যাই, তারপরে আবার কাউন্টারে টাকা দিলাম। আবারো প্রসেস প্রায় শেষের দিকে তখন বাবা ফোন করে বলছে বাইক কেনা কি শেষ, আমি বলছি শেষ কিন্তু কালার টা চেঞ্জ করে নিছি।


বাবা রেগে গিয়ে বলছে নীল কালার লাগবে যেখানে পাবে ওইখান থেকে নিয়ে আসবে। তারপরে আবারো টাকা ব্যাক নিলাম, শোরুম থেকে সময় চাচ্ছে তারা বললো ১৫ দিন পরে নীল কালার এনে দিবে । তখন বাড়ি চলে আসলাম বাইক না কিনেই, পরের দিন রাতে বাবা Yamaha Fazer এর ছবি দেখান, বলে এটা কি পছন্দ হয়। আমার তো আগে থেকেই ইয়ামাহা বাইকের প্রতি আগ্রহ ছিল, আমি ভাবছি বাবা রাগ করে এটা বলছে। পরবর্তীতে সবাই আমাকে বোঝাচ্ছিল বাবা যেটা বলে ওইটাই নাও, আমিতো মহা খুশি অবশেষে বাবা-ছেলের পছন্দটা মিলে গেছে। সেই রাতে আমাকে বলছে কাল সকালে রাজশাহীতে গিয়ে বাইক নিয়ে আসবে ।

বাবার পছন্দ ছিল কালো কালারের ফেজার, তারপর বাইকটা কিনে নিয়ে চলে আসলাম। এবং সেই বাইকটি দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় আমি ব্যবহার করছি 88000 কিলোমিটার হওয়ার পরে বাইকটা বিক্রি করে দেই। বাইক টা আমার খুব পছন্দের ছিল ইঞ্জিনে কোন প্রকার কাজ করতে হয় নাই এতদিন চলার পরেও।  তারপরে কিছুদিন মামার বাইক ব্যবহার করলাম, তখন ইয়ামাহা এফ জেড এর v3 নতুন আসছে মার্কেটে। আমার ইচ্ছে ছিল সেই বাইকটা কেনার। কিন্তু বাবার সেটা পছন্দ না আমাকে বলে আর কি বাইক আছে, মানে ফেজার এর মত সামনের মাথাটা লাগবে, তখন R15 /  CBR এর ছবি দেখাই তারপর বাবা আমাকে R15 v3 নিতে বলে। আমি এবার এত পরিমান খুশি যা বলে বোঝানো যাবে না। কিভাবে যেন বাবা-ছেলের পছন্দ মিলে যায়, R15 আমার আগে থেকেই পছন্দ কিন্তু দামটা বেশি বলে একটু পিছিয়ে ছিলাম।

তখন বাইকের প্রি বুকিং অফার ছিল, আমি 1,00,000 টাকা প্রি বুক দিলাম Yamaha R15 V3 Indian Version Dual ABS বাইকটির জন্য। তার কিছুদিন পরে বাইকটা ডেলিভারি দেয় আমাকে। বাইক টা নিতে ফ্রেন্ডরা মিলে মোট 14 জন গিয়েছিলাম শোরুমে। আমি যখন আমার বাইকটি প্রথম চালাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল নিজের ভেতরে অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করছে, আমি মনে করি প্রতিটা ছেলেরই বাইক একটা স্বপ্ন আর সে স্বপ্ন আমারও ছিল,সেটা পূরণ হয়েছে, এমন এক অনুভূতি যা বলে বোঝানো সম্ভব না। 

বাংলাদেশে ইয়ামাহা ব্রান্ডের বাইক এর মধ্যে Yamaha R15 V3 অন্যতম একটি স্পোর্ট সেগমেন্টের জনপ্রিয় বাইক। যাতে রয়েছে Fi ইঞ্জিন, VVA,6 Speed transmission, Assist & slipper clutch, Dual channel ABS এছাড়াও অনেক উন্নত টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন অবস্থা থেকে এখন পর্যন্ত আমি যথা সময় অনুযায়ী শোরুমের সার্ভিস সেন্টারেই সার্ভিসং করিয়েছি, আমার বাইকের জ্বালানি হিসেবে সবসময় অকটেন ব্যবহার করছি এবং মাইলেজ আলহামদুলিল্লাহ ভালো পেয়েছি , হাইওয়েতে ৪৪ থেকে ৪৯ এবং সিটিতে ৩২ থেকে ৪২ যাতে আমি সন্তুষ্ট। আমি সবসময় ঘুরতে ভালোবাসি এবং মাঝেমধ্যে লং ট্যুর এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ি। 

বর্তমানে আমার বাইকটি ৩৭,০০০ কিলোমিটার চলেছে, আমি এই ৩৭,০০০ কিলোমিটার বাইকটি চালানোর মধ্যে সবসময় অকটেন ব্যবহার করেছি। ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে ব্যবহার করেছি Yamaha lube যার গ্রেড 10w40, এছাড়াও Mobile 1 ব্যবহার করেছি, সবগুলোই ছিল সিনথেটিক যার প্রত্যেকটির পারফরমেন্সে আমি বেশ ভালো পেয়েছি। বাইকের মডিফিকেশন তেমন কিছু করিনি শুধুমাত্র হর্ন পরিবর্তন করেছি, এবং এক্সট্রা ফগ লাইট ইনেস্টল করেছি । অনেক কিলোমিটার চালানোর কারণে আমার বাইকের কিছু স্টক পার্টস পরিবর্তন করতে হয়েছে যার মধ্যে স্পার্ক প্লাগ, এয়ার ফিল্টার, ক্লাস কেবল, পিকআপ কেবল, সামনের এবং পেছনের চাকার ব্রেক সু, এগুলো পরিবর্তন করতাম শুধুমাত্র নিজের কমফোর্ট এর জন্য।  আর ২২ হাজার কিলোমিটার পর আমার বাইকের চেনসেট এবং সামনে পেছনের টায়ার পরিবর্তন করতে হয়েছে, এবং ৩২,০০০ কিলোমিটার চালানোর পর আমি বাইকের ইঞ্জিনের বেশকিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি যেমন, সিলিন্ডার, ভাল্ব, টাইমিং চেইন ইত্যাদি। এগুলো পরিবর্তন এর অন্যতম কারণ ছিল বাইকের সাউন্ড খারাপ হয়ে গিয়েছিল বাইকের আরপিএম অনুযায়ী স্পিড পাচ্ছিলাম না। আমি এই পার্সগুলো পরিবর্তন করার পরেও সমস্যাগুলো দূর হয় নাই, বলে রাখা ভালো সার্ভিস করানো হয়েছিল ইয়ামাহা কর্তৃক ডিলারের কাছে।

পরবর্তীতে সমস্যা নিয়ে কিছুদিন বাইক চালালাম তারপরে ঢাকাতে Yamaha 3s centre এ গিয়ে আবারও বাইক সার্ভিস করালাম Crankshaft, Clutch Plate, Bearing সহ আরো অনেক কিছু।

Yamaha R15 V3 Indian Version Dual ABS বাইকের কিছু ভাল দিক -

  • প্রিমিয়াম লুক যা সবাইকে আকৃষ্ট করে।
  • বাইকটির থ্রটল রেস্পন্স , টপ স্পিড খুব ভালো ।
  • কন্ট্রোলিং এর কথা না বললেই নয়, ডুয়েল চ্যানেল এবিএস, যা আমাকে বাইক রাইড করার সময় আত্মবিশ্বাস দূঢ় করে।
  • বাইকের মাইলেজ আমি হাইওয়েতে ৪৯ কিলোমিটার পর্যন্ত পেয়েছি।
  • বেশ কিছু আধুনিক টেকনোলজি রয়েছে বাইকটিতে।

Yamaha R15 V3 Indian Version Dual ABS বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • সবচাইতে আমার কাছে যেটি খারাপ লেগেছে সেটা হলো এই বাইকের সাউন্ড নষ্ট হয়ে যাওয়া, প্রথম অবস্থায় বাইকের সাউন্ডটি খুব ভালোলাগে। কিন্তু 30k+ চালানোর পর বাইকে ভেতর থেকে আস্তে আস্তে বাজে আওয়াজ হয় যা খুবই বিরক্তিকর লাগছে আমার।
  • রাতে রাইড করার জন্য এই বাইকের স্টক লাইটের আলো আমার কাছে খুবই সীমিত মনে হয়েছে । যার কারণে আমার এক্সট্রা দুটি ফগ লাইট ব্যবহার করতে হয়েছে ।
  • ৩২,০০০ কিলোমিটার চালানোর পর বাইকের ইঞ্জিনের ৯০% স্পেয়ার পার্টস পরিবর্তন করতে হয়েছে। যা আমাকে খুবই হতাশ করেছে, এই বাইকের স্পেয়ার পার্টস গুলোর দাম অনেক বেশি এবং সব জায়গাতে পাওয়া যায় না।
  • সিটিং পসিশন এর ক্ষেত্রে পিলিয়ন সিট অনেকটা উঁচু এবং বাইকটা চালালে হাত একটু পেইন করে।

আমি আমার Yamaha Fazer & R15 v3 বাইকটি নিয়ে বাংলাদেশের প্রায় 40 টি জেলা ভ্রমণ করেছি, কখনোই বাইকটি আমাকে নিরাশ করেনি, আমার ইচ্ছা আমি বাইক নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ ভ্রমণ করব, এবং একসময় দেশের সীমানা পেরিয়ে দেশের বাইরেও ভ্রমণ করার ইচ্ছা আছে। 

 বাইক নিয়ে ট্যুর করার জন্য এবং সেফটি মেইনটেন করে বাইক চালানোর জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করি এবং নিজেও সেগুলো মেনে চলি এবং আমি বেশ কিছু বাইকিং গ্রুপের সাথে জড়িত। পরিশেষে বলতে চাই Yamaha এমন একটি বাইক যা মডেলের উপর ভিত্তি করে সবাইকেই মানায় আপনি যদি মনে মনে একটি Yamaha বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আমি বলব আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । সাবধানে রাইড করলে এবং যত্ন করে রাখলে বেশ ভালো পারফর্মেন্স পাবেন । সবাই সাবধানে রাইড করবেন এবং অবশ্যই সেফটি মেইনটেন করে বাইক চালাবেন, সবার প্রতি রইল অনেক অনেক শুভকামনা।

r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল  এবং ফেসবুক গ্রুপ ঘুরে দেখুন। শুধু ইয়ামাহা নয় আরো বাইকের ইউজার রিভিউ রয়েছে আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য এবং  r15 v3 ভালো বা খারাপ দিক আপনার কাছে কোনটা মনে হয় সেগুলো আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন । ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ সোহেল রানা

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

Honda Shine 100

Honda Shine 100

Price: 107000.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

Qj motor srk 250

Qj motor srk 250

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes