Honda Livo 110 ২,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - নাজমুন হাসান নিপুন

This page was last updated on 17-Oct-2022 03:36pm , By Raihan Opu Bangla

আমি নাজমুন হাসান নিপুন। আমার বাড়ি মূলত বাগেরহাট । কিন্তু চাকরির সুবাদে বর্তমানে নোয়াখালী থাকা হয় । এখন আমি আপনাদের সাথে আমার ব্যবহার করা Honda Livo 110 ২০১৯ মডেলের বাইকটি নিয়ে ২,০০০ কিলোমিটার রাইড করার পর কিছু কথা শেয়ার করবো।

Honda Livo 110 ২,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ

 honda livo 110 user review 

বাইকের প্রতি আমার আগ্রহের শুরুটা খুব ছোটবেলা থেকেই। ছোটবেলাতে যখন আমার প্রতি ক্লাসে গ্রীষ্মের ছুটি এবং বার্ষিক পরীক্ষার পর খুলনা খালার বাড়িতে বেড়াতে আসার সুযোগ হতো । আমাকে আমার খালু তার Hero Honda CB 100 মোটরসাইকেলে করে বাগেরহাট থেকে খুলনা নিয়ে আসতো । ছোটবেলাতে ঐ জার্নিটা আমার কাছে পুরো থ্রিলিং ছিলো । দিন যতই বাড়তে লাগলো বাইকের প্রতি আমার আগ্রহ ততই বাড়তে লাগলো । রাস্তা দিয়ে যখন কেউ বাইক চালিয়ে যেত আমি তখন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখতাম । আমি একটু চাপা স্বভাবের ছিলাম তাই কখনো কারো কাছে চালানো শেখার জন্য বাইক চাইনি। আমার জীবনে প্রথম বাইক হাতে নেই ২০১২ সালে আমার এক মেসের ছোট ভাইয়ের বাইক । সেটি ছিলো TVS Apache RTR 150। মাঠের ভিতর জীবনে প্রথম সেলফ দিয়ে স্টার্ট দিলাম । ক্লাচ চেপে ধরে বাইকটি নিউট্রাল গিয়ার থেকে প্রথম গিয়ারে দিলাম । ধীরে ধীরে ক্লাচ ছাড়লাম আর থ্রটো্ল বাড়ালাম এবং বাইক চলতে শুরু করলো । সে এক অসাধারন অনুভুতি যা বলে বুঝানো সম্ভব না ।

 honda livo ownership review 

নিজের বাইকের স্বপ্ন ছিলো কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্তের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। ধীরে ধীরে অনেক সময় কেটে গেলো । চাকরিজীবনে প্রবেশ কর‌লাম কিন্তু আমার বাইকের প্রতি আগ্রহ বিন্দুমাত্র কমেনি। সরকারি প্রকৌশলী হবার সুবাদে একটি সরকারি বাইক পেলাম । হোন্ডা সিডিআই, টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন । সেটি আমি পরম মমতায় চালাতাম । কিন্তু সেটি ছিলো ১৯৮৩ সালের, সপ্তাহে দুই-তিনবার করে নষ্ট হতো । তখনই চিন্তা করলাম নিজে একটি বাইক কিনবো। আমার স্ত্রী আমার বাইকের প্রতি আগ্রহ দেখে তার জীবনের সকল সঞ্চয় বের করে দিয়ে বললো চলো বাইক কিনে ফেলি ।

তখন চিন্তা শুরু করলাম আমার জন্য কোন বাইকটি ভালো হবে । আমার ভালো মাইলেজ এবং কম দামের একটি বাইক দরকার ছিলো । হোন্ডা ব্রান্ডের প্রতি একটা আস্থা ও ভালোবাসা আর সবার মতো আমারও ছিলো । স্টাইলিশ লুক, পাওয়ার ফুল ১১০ সিসি ইঞ্জিন ও বাইকবিডি ব্লগে ভালো ইউজার রিভিউ দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম এই বাইকটি নিবো। যে দিন বাইক কিনলাম তার আগের দিন আমার স্ত্রীকে নিয়ে গেলাম নোয়াখালীর হোন্ডা গ্যালারীতে। হোন্ডা লিভো নিয়ে একটি টেস্ট রাইড দিলাম । অসাধারন লাগলো বাইকটির স্মুথনেস দেখে । আমার স্ত্রীরও বাইকটি খুব পছন্দ হলো । সে কালার চয়েস করে দিলো গ্রে একসিন মেটালিক কালার । বাইকটির দাম ১ লক্ষ ৯ হাজার ৯৯০ টাকা (অবশ্য ডিস্ক ব্রেকের বদলে ড্রাম ব্রেক নিলে আরো দশ হাজার টাকা দাম কম পড়বে) ।

 bhl 

পরদিন অফিস শেষ করে সন্ধ্যায় আমার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী স্যার ও একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভাইকে নিয়ে চলে গেলাম হোন্ডা গ্যালারী শো-রুমে। প্রয়োজনীয় কাজ সেরে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাইকটি হাতে পেলাম । নিজের বাইকের হাতলে হাত রাখতেই শরীর বেয়ে নেমে আসলো এক অসাধারন অনুভুতি । দ্রুত বাইকটি চালিয়ে বাসায় আসলাম । স্ত্রী ও মাকে নিয়ে বাইক কিছুক্ষণ চালালাম । এর পর থেকে শুরু হয় হোন্ডা লিভোর সাথে আমার পথ চলা । যতই দিন যাচ্ছে ততই বাইকটির স্মুথনেস আমাকে মুগ্ধ করছে ।

Honda Livo 110 বাইকটির ফিচার্সঃ

  • ১১০ সিসির শক্তিশালী পাওয়ার ফুল ইঞ্জিন
  • টিউবলেস টায়ার
  • ২৪০ মিমি এর ডিস্ক ব্রেক
  • ৮.৫ লিটার তেলের ট্যাংক
  • উভয় টায়ার সাইজ ১০০-৮০-১৮
  • কর্নারিং এঙ্গেল ৪৫ ডিগ্রি

Honda Livo 110 - হ্যান্ডেলিং ও কন্ট্রোলিংঃ বাইকটির কন্ট্রোল খুবই ভালো । গিয়ার শিফটিং যথেষ্ট স্মুথ । প্রথম দিকে চালাতে গিয়ে কয়েকবার চাকা স্লিপ করে চিকন চাকার কারণে । টায়ার প্রেশার ম্যানুয়াল অনুযায়ী রেখে পরে ফাকা রাস্তায় প্র্যাকটিস করে অভ্যস্ত হয়েছি এটাতে কিভাবে ব্রেক করতে হবে । খেয়াল করে দেখলাম ১০০/১১০ সিসি এর সব ব্র্যান্ড এর বাইকেই চাকা চিকন । চাকা মোটা হলে মাইলেজ কমে যাবে । সামনের ব্রেক ৬৫% পিছনে ২৫% এই অনুপাতে ব্রেক করা প্র্যাকটিস করলে আশাকরি আর সমস্যা হবে না । সামনের হাইড্রলিক ব্রেক বেশ ভাল ।

 honda bike price in bangladesh

Honda Livo 110 - সিটিং পজিশন এবং রাইডিংঃ Honda Livo 110 এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বেশ ভালো। ১৮০ মিলিমিটার, যা যত উঁচুই স্পিড ব্রেকার হোক না কেন বাইক কখনোই রাস্তায় ঘষা খাবে না । আমার হাইট ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। আমার পা বাইকের দুই সাইডে একদম ফ্লাট ভাবে রাখা যায় না। তবে আমার এতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যাদের হাইট এর চেয়ে কম তারা বাইকে বসে চেক করে কিনলে ভাল । 

Honda Livo 110 - মাইলেজঃ আমার বাইক ২০০০ কিলোমিটার চলেছে । আমি এখন পর্যন্ত ৬৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি । বাইক ফোর্থ গিয়ারে রেখে ইকোনোমি রেঞ্জে চালালে ভালো মাইলেজ পাওয়া যায় । তবে যে ভাবেই চালানো হোক না কেন হোন্ডা লিভো তে ৫০ মাইলেজ পাওয়া যাবেই, অন্তত আমার ক্ষেত্রে এটা হয়েছে । অবশ্য ভালো মাইলেজ পেতে গেলে নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করতে হবে । আমি হোন্ডা রিসার্চারদের উপর আস্থা রেখে হোন্ডা ইঞ্জিন অয়েল ইউজ করি । 

বাইকের মেইন্টেনেন্সঃ বাইক আমি প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত দুইবার ভালো করে মুছি । প্রতি মাসে একবার শ্যাম্পু দিয়ে বাইক ওয়াশ করি । প্রতি মাসে বাইকের চেন লুব করি । চেইন লুব করার জন্য আমি মটুল চেইন লুব ইউজ করি । বাইকের টুকটাক সমস্যা, ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ আমি নিজেই করি । বাইক ওয়াশ আমি নিজেই করি । এখনো কোন বড় ধরনের সমস্যায় আমি পড়ি নাই ।

বাইকের যেহেতু এখনো ব্রেক-ইন-পিরিয়ড শেষ হয়নি সেহেতু আমি এখনো টপ স্পীড চেক করিনি। আমি এখনো ৬০ এর উপরে গতি উঠাইনি । তবে বাইকের এক্সেলারেশন খুবই স্মুথ । বাইকের সাসপেনশন নরমাল রোডে খুবই ভালো তবে খুব বেশি ভাঙাচোরা রাস্তায় একটু সমস্যা হয় ।

 livo user in bd

Honda Livo 110 ৫ টি ভালো দিকঃ

  • সামনের ডিস্ক ব্রেক খুবই ভালো
  • এক্সেলারেশন খুবই স্মুথ
  • ভাইব্রেশন নেই বললেই চলে
  • টিউবলেস টায়ার ও স্টাইলিশ লুক যা বাইকটিকে অনন্য করে তুলেছে
  • কর্নারিং এঙ্গেল ৪৫ ডিগ্রি যা জ্যামে চলার জন্য আদর্শ ।

Honda Livo 110 ৫ টি খারাপ দিকঃ

  • স্টক হেডলাইট কম স্পীডে একেবারেই আলো কম দেয়
  • খুব বেশি ভাঙা-চোরা রাস্তায় সাসপেনশন ভালো কাজে আসে না
  • তেলের ট্যাংকির ধারণ ক্ষমতা আর একটু বেশি হলে ভালো হতো
  • পিছনের স্টক টায়ার বেশ চিকন যা গাড়ির লুকের সাথে মানায় না
  • আর একটি গিয়ার থাকলে ভালো হতো ।

Honda Livo 110 চালিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট । কম বাজেটের মধ্যে ভালো একটি বাইক । এই ছিলো আমার ২০০০ কিলোমিটার রাইড করার পরে মালিকানা রিভিউ । কষ্ট করে রিভিউটি পড়ার জন্য। Honda Bike Price in Bangladesh সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ নাজমুন হাসান নিপুন

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Honda XL250 Degree

Honda XL250 Degree

Price: 0.00

Yamaha FZ-S 153

Yamaha FZ-S 153

Price: 0.00

Yamaha YB 100 Deluxe

Yamaha YB 100 Deluxe

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

View all Upcoming Bikes