Suzuki GSX-R 150 ১৫০০ কিলোমিটার ইউজার রিভিউ- লিয়ন
This page was last updated on 27-Jul-2024 01:26am , By Raihan Opu Bangla
আমার গ্রামের বাড়ি যশোর হওয়ার কারনে ছোট বেলা থেকেই আমার বাইকের উপর ভীষণ আগ্রহ সৃষ্টি হয়। কারন ঐ এলাকাতে সবাই বাইকেই বেশি চলাফেরা করে। বলা যায় ঐ এলাকার চলাচলের প্রধান বাহনই বাইক। আমি লিয়ন রেজন হক বর্তমানে মোহাম্মদপুরে থাকি।
বর্তমানে আমি বাংলাদেশের অন্যতম স্পোর্টস বাইক Suzuki GSX-R 150 ব্যবহার করছি। বাইকটি আমি প্রায় 1500 কি.মি রাইড করেছি এ পর্যন্ত। আজ এই বাইকটি নিয়ে কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্যই আমার এ লেখা।ছোট বেলা থেকেই আমার বাইকের উপর ভীষণ আগ্রহ থাকার কারনে ফ্যামিলি থেকে অনেক ঝামেলার পরও ক্লাস ৮ থেকেই বাইক চালানো শুরু করি। আমার বাইক চালানো শুরু Hero Honda Passion Plus দিয়ে। আমি এর পরেও ২টি বাইক পরিবর্তন করেছি, সেগুলো হল Bajaj Pulsar 150 & Hero Honda Hunk।
অনেকদিন ধরে একটি স্পোর্টস বাইকের শখ থাকার কারনে সব দিক বিবেচনা করে Suzuki GSX-R 150 বাইকটি কিনলাম। বাইকটি নির্বাচন করার আগে আমি স্পোর্টস ক্যাটাগরির আরও কয়েকটি বাইক চালিয়ে ধারনা নিয়েছি।
বাইকগুলো হল – Honda CBR-150, Yamaha R-15। মূলত Suzuki GSX-R 150 বাইকটির দাম, লুকস, মাইলেজ, স্পিড, কন্ট্রোলিং ও টার্নিং রেডিয়াস এই সমস্তদিক বিবেচনা করেই আমি বাইকটি নির্বাচন করি। বাইকটি আমি সিটি রাইড এর পাশাপাশি লং ট্যুরের জন্য ব্যবহার করি।
Click To See Suzuki GSX-R 150 Price In Bangladesh
আমি Suzuki GSX-R 150 বাইকটি Suzuki এর অথোরাইজড সেলার পয়েন্ট (Bikerz Paradise) থেকে ৩,৫০,০০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। যদিও বাইকটি পেতে আমাকে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়। তারপরও বাইকটি হাতে পাওয়ার পর আমি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। নিজের প্রথম স্পোর্টস বাইক রাইডের অনুভূতি ছিল অসাধারণ।বাইকের উপরে বসতেই কেমন একটা ভাললাগা কাজ করে।
বাইকটি আমি প্রায় 1500 কিমি রাইড করেছি এ পর্যন্ত। এই বাইকের ইঞ্জিন অয়েল ১৩০০ মিলি হওয়ায়, এটা পরিবর্তন করতে একটু ঝামেলা মনে হয়। আমি মতুল 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি, দাম ৫০০ টাকা এবং এটাতে পারফরমেন্স ভালই পাওয়া যায় অনান্য ইঞ্জিন অয়েলর তুলনায়।
Click To See Suzuki GSX-R 150 Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
আমি Suzuki অথোরাইজড সার্ভিস সেন্টার বিজয় সরণী থেকে সার্ভিসিং করাই। যেহেতু এটা আমার শখের একটি বাইক তাই আমি প্রত্যেক সপ্তাহে বাইকটি ওয়াশ করি। কথায় আছে “শখের দাম লাখ টাকা”, তাই কেয়ার তো করতেই হবে।
আমার মোডিফিকেশন খুব একটা ভাল লাগেনা তাই কোন কিছু মডিফাই করিনি। কিন্তু ইচ্ছা আছে ফগলাইট লাগানোর। হেডলাইটের আলো সিটি রাইডের জন্য যথেষ্ট হলেও হাইওয়েতে রাইড করতে একটু বেগ পেতে হয়। নতুন বাইক তাই এখনও কোন পার্টস পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়নি।আমি কয়েকদিন আগে মাওয়া যাই, মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তাটা এতটাই চমৎকার যে আমি নতুন বাইকে স্পীড তুলতে না চাইলেও মনের ভুলে ১৩৭ স্পিড তুলে ফেলি, যদিও আরো স্পিড ওঠানো যেত। তবে আমি অতিরিক্ত স্পিড তুলিনি ।
Click To See All Suzuki Bike Price In Bangladesh
বাইকটির অনেকগুলি ভাল দিক রয়েছে এর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো ৫টি দিক হল-
- বাইকটির লুকস এক কথায় অসাধারন।
- স্লিম লুকিং স্পোর্টস বাইক হওয়ায় অনান্য কমিউটার বাইকের মত সহজেই জ্যামের মধ্যে চিপা জায়গা দিয়ে বের হওয়া যায়।
- বাইকটির স্পীড নিয়ে না বললেই নয়। রেডি পিকআপের জন্য এর সাথে গতিতে আমদের দেশের ১৫০ সি.সি.এর খুব কম বাইক-ই টক্কর দিতে পারবে।
- স্পোর্টস বাইক হলেও বাইকটির টার্নিং রেডিয়াস অসাধারন। খুব সহজেই যেকোন জায়গা থেকে ঘোরানো যায়।
- স্পোর্টস বাইক হিসেবে এর মাইলেজ চমৎকার। কারণ ৪০ কি.মি. মাইলেজ একটা স্পোর্টস বাইকের জন্য যথেষ্ট।
- বাইকের এগ্রেসিভ লুকিং হলেও বসে রাইড করতে অস্বস্তি লাগে না অন্যান্য রেসিং বাইকের মত। আমি যথেষ্ট কমফোর্টেবল এখানে, উল্লেখ্য যে আমার হাইট ৫.৬”।
- বাইকটির দামের কথা না বললেই নয়, মাত্র সাড়ে তিন লাখ টাকায় এর থেকে ভাল রেসিং বাইক পাওয়া অসম্ভব।
আমার কাছে ভাল লাগার অনেকগুলো কারন থাকলেও কয়েকটা দিক কিছুটা খারাপ লেগেছে সেগুলো হল-
- পিলিয়ন সিটটি খুবই ছোট মনে হয়, এটা আর একটু আরামদায়ক হলে ভাল হত।
- বাইকটির ইঞ্জিন অয়েল ১৩০০ মিলি হওয়ায় এটা পরিবর্তন করতে একটু ঝামেলা মনে হয়।
আমার কাছে বাংলাদেশে স্পোর্টস বাইকগুলোর মধ্যে Suzuki GSX-R 150 বাইকটিই সবচেয়ে বেশি ভাললাগে এর দাম, স্পীড, মাইলেজ, কন্ট্রোলিং, টার্নিং রেডিয়াস ও লুক ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে। তাই যারা স্পোর্টস বাইক কেনার কথা চিন্তা করছেন তারা এই বাইকটিকে ১ম পছন্দ হিসেবে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ ।
লিখেছনঃ লিয়ন রেজন হক
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।