Runner AD 80S Deluxe ২২,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - মিঠুন
This page was last updated on 13-Jul-2024 10:03pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমি মিঠুন। আমার স্থায়ী ঠিকানা খুলনা বিভাগের নড়াইল জেলায়। বর্তমানে আমি নড়াইলে থাকি। বর্তমানে আমি রাইড করছি Runner AD 80S Deluxe । আজ আপনাদের সাথে বাইকটি নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
এই বাইকটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। চায়না গাড়ি হিসাবে আমার কাছে মোটামুটি ভালো লাগে বাইকটি। বাইকটি আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। কিন্তু বাইকটির মূল্য তখন ৮৪ হাজার টাকা বাজারে দাম ছিলো। কিন্তু তখন একটা অফারের কারনে আমি ১৪০০০ হাজার টাকা ছাড় পেয়েছিলাম। আমি কেন বাইকিং ভালোবাসি? আমি বাইকিং ভালোবাসি এর পিছনে অনেক গুলো কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কারণ ছোটবেলা থেকেই মোটরসাইকেলের প্রতি একটা অন্যরকম নেশা কাজ করতো। এই থেকে বাইকের প্রতি একটা অন্যরকম ভালোবাসা তৈরি হয়ে। তাই বাইকিং আমি ভালোবাসি। বাইক একমাত্র যানবাহন যেটা নিয়ে স্বাধীনভাবে এবং নিরপেক্ষ ভাবে নিজের মতন করে সমস্ত জায়গায় ঘোরা যায়।
আমি যেভাবে আমার Runner AD 80S Deluxe বাইকটি বেছে নিলাম - আমি যেহেতু মার্কেটিং জব করি, তাই ইচ্ছা ছিলো ছোট কোনো বাইক কেনার। সাথে আর একটা প্রবলেমও ছিলো টাকার। তাই এর জন্য ইচ্ছা ছিলো যে রানার বাইক ব্যবহার করবো যতদিন মার্কেটিং জব এর সাথে জড়িত আছি। এই চিন্তা থেকেই আমার বাইক বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসলো এবং আমার বাজেট অনুসারে আমি Runner AD 80S Deluxe বাইকটি বেছে নিলাম।
আমি কেন Runner AD 80S Deluxe বাইকটি বেছে নিলাম - আমি স্বল্প বাজেটের ভিতর ভালো মাইলেজ পাবো এই ধরনের একটা বাইক খুজছিলাম। বাজেট কম থাকায় চিন্তা করছিলাম এই বাজেটের ভিতর Runner AD 80S Deluxe তে ভালো মাইলেজ পাবো, মেইনটেনেন্স খরচ কম পরবে। ঠিক এই সকল চিন্তাভাবনা যখনই করলাম তখনই দেখলাম যে এই বাজেটের ভিতর এবং রানার ব্র্যান্ডের ভিতর ভালো কোয়ালিটির ৮০সিসির AD 80S Deluxe আমার জন্য পারফেক্ট, এই জন্য আমি এই বাইকটি বেছে নিলাম । Runner AD 80S Deluxe বাইকটির দাম এবং বাইকটি কোথা থেকে নিয়েছি - আমি যখন বাইকটি ক্রয় করি তখন এর বাজারমূল্য ছিল ৮৪০০০ হাজার টাকা মাত্র। আমি তখন ৭০০০০ হাজার টাকা দিয়ে কিনি। আমি বাইকটি সরাসরি নড়াইল রানার শো- রুম থেকে নিয়েছি। যেহেতু এইখানে আমার বাড়ি আর এই শো-রুম এর ম্যানেজার এর সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো।
Runner AD 80s Deluxe Price In Bangladesh
Runner AD 80S Deluxe বাইকটির ফিচারঃ
- বাইকটি ২০১৮ সালের আপডেট বাইকটিতে রয়েছে সেলফ স্টার্ট । কারন আগে এই বাইকে সেলফ স্টার্ট ছিলোনা
- সামনে এবং পিছনে দুটি ব্রেকই ড্রাম ব্রেক
- সব লাইট হ্যালোজেন লাইট
- এনালগ স্পিডোমিটার
- ৮০সিসি একটি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন
আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট বাইকটি রাইডিং করে। বাইকটি রাইড করার সময় একটা কথাই বারবার স্মরণে আসে। যে বাইক চালানো এতটাই পছন্দ করতাম যে একটা স্বপ্নের মতন ছিল। নিজের একটা বাইক থাকবে আর সেই বাইকটা নিয়ে আমি রাস্তায় নিজের মতো করে রাইড করে বেড়াবো। যত বার সার্ভিস করিয়েছি সব বারই শো-রুম থেকে। কোনো বার সার্ভিস করাতে যেয়ে আমার কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি। বাইকটা আমি টোটাল ২২ হাজার কিলোমিটার রাইড করেছি। আমার বাইকটিতে কখনো কোন প্রবলেম দেখা দেয়নি। বাইকটি নতুন কেনার পর থেকে ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর পূর্বে আমার বাইকটির মাইলেজ পেতাম ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। কিন্তু ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর পরবর্তী সময় থেকে বা একটু আগে থেকেই মাইলেজ বাড়তে থাকে অর্থাৎ তখন আমি প্রতি লিটারে সিটি এবং হাইওয়েতে বাইকটি রাইড করে মাইলেজ পাচ্ছি ৬৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার।
Also Read: Runner AD 80s Deluxe ইঞ্জিন ওয়েল লাগে ৬০০ মিলি - নজরুল
আমি বাইকের স্পার্ক প্লাগে ময়লা জমে যাওয়া, এয়ার প্রেসার সঠিক রাখা, সবসময় ফুয়েল চেক করে ব্যবহার করা, ব্যাটারির সঠিক মেইনটেনেন্স, ময়লা পরিষ্কার করা, রোদে গেলে বাইকটি ঢেকে রাখা,পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে সাথে সাথে পানি গুলো শুকিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা, ক্লাচ কেবল, ব্রেক কেবল, থ্রটল ক্যাবল, চেইন এগুলো সব সময় ধুলোবালিমুক্ত রাখা মেনটেনেন্স করে থাকি। আমি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম Super 4t ব্যবহার করেছি। কিন্তু এই ইঞ্জিন অয়েল দেয়ার পর ইঞ্জিন খুব গরম হতো। তারপর আমি Super 4t অয়েল বাদ দিয়ে এখন আমি Super v ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। এখন কোনো প্রবলেম হয় না।
৮০ সিসি গাড়ি হলেও আমি অনেক বেশি লং ড্রাইভ করি বাইকটি দিয়ে এবং একটু ওভার স্পিডে রাইডিং করি। তবে এর জন্য বাইকটিতে বেশি পার্টস আমাকে পরিবর্তন করতে হয়নি। আসলে ৮০ সিসির গাড়ির আবার টপ স্পিড এর কথা কি বলবো। তারপরও বলি খুব মজার বিষয় ৮০ সিসি গাড়িতে আমি ৮৫ স্পিড পায়ছি (কারন এটা চায়না গাড়ি)।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- বাইকটির মাইলেজ অনেক ভালো
- পিলিয়ন নিয়ে চালাতে বেশ আরামদায়ক
- বাইকটি ছোট হওয়ায় অল্প জায়গা/জ্যামের ভেতরে কন্ট্রোল করতে অনেক সুবিধা
- মার্কেটিং লোকের জন্য খুবই ভালো
- বাইকটি সবথেকে বড় সুবিধা বাইকটি লো মেনটেনেন্স একটি বাইক
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- পিলিয়ন সহ সাসপেনশন খুব একটা আরামদায়ক নয়
- ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার উপরে স্পিড তুললে বাইকটি একটু ভাইব্রেশন করে
- দীর্ঘ সময় ধরে বাইকটা রাইড করলে ইঞ্জিন একটু বেশি হিট হয়ে যায়
- টিউবলেস না হওয়া বিপদ একটু বেশি, লিক হলে অসুবিধায় পরতে হয়
আমি মার্কেটিং জব করি তাই বলছি না একজন গ্রাহক হিসেবে এবং একজন রানার মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী হিসেবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা এই ছোট রিভিউটা মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করলাম। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছনঃ মিঠুন আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।