Honda CB Hornet 160R CBS ১০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - নাজমুস সাকিব

This page was last updated on 13-Jul-2021 05:14pm , By Ashik Mahmud Bangla

আমি নাজমুস সাকিব, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ(এআইইউবি) তে ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যয়নরত আছি । মিরপুর এলাকায় বসবাস আমার,বয়স বাইশ বছর চলছে । বর্তমানে আমি রাইড করছি Honda CB Hornet 160R CBS বাইকটি । আজ বাইকটি নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।

cb hornet 160r cbs striking green

দুই চাকা জিনিসটার প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই । যখন অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলাম তখন সাইকেলে করে ঘুরে দেখতাম চারপাশটা, আর এখন বাইকে করে ঘুরে দেখি, পার্থক্য এতটুকুই । সাইকেল নিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩৬ কিলোমিটার চালিয়েছিলাম ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে, সেদিন একটু কষ্ট হয়ে গিয়েছিল বটে । ভাবতাম একটা বাইক হলে ব্যাপারটা অনেকটাই সহজ হয়ে যেতো । বাইক যখন ছিলনা , আশপাশ দিয়ে কোনো বাইক চলে গেলে তাকিয়ে থাকতাম । কোনো বাইক এখনো পাশ দিয়ে চলে গেলে বাইকটার মডেল আন্দাজ করতে না পারলেও ব্রান্ডের নাম নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারি চোখ বন্ধ করেই । যখন কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখলাম, বাইক কেনার পিছনে মূল যে বাধা টা ছিল, যেটা কিনা "বয়স" সেটা আর থাকলোনা । কিন্তু আমি তখনো বাইক চালাতে পারিনা ,খুব টেনশন হতো বাইক কিনে সেটা চালাতে পারবো তো ঠিকমতো ? নতুন বাইক ফেলে দিয়ে নষ্ট করে ফেলবোনা তো ?

cb hornet 160r cbs user reveiw

বাইক শিখার জন্যে ভাল কোনো জায়গার খোঁজও পাচ্ছিলাম না । তাই সিদ্ধান্ত নেই নতুন বাইক দিয়েই ভালোভাবে শিখে ফেলবো বাইক চালানো । যদিও শেষে একটা ৮০ সিসির ছোট্ট একটা বাইক দিয়ে ক্লাচ আর এক্সিলারেটরের কম্বিনেশনটা রপ্ত করে নিই কোনোরকমে । বাজেট দুই লাখ টাকা ফিক্স করি, এবং খুঁজতে থাকি কোন বাইকটা নেওয়া যায় । বর্তমানে বাংলাদেশে দুই লাখ বাজেটে বাইকের প্রচুর কালেকশন রয়েছে আমরা সবাই জানি । আমার ডিমান্ড ছিল ভালো ব্রেকিং,স্টাইলিশ লুক এবং একই সাথে কমফোর্ট এবং বেটার মাইলেজ । মাঝেমধ্যে ট্যুর দেওয়া ছাড়াও প্রতিদিন ভার্সিটি যাওয়া আসা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কাজের জন্যে বেটার মাইলেজ এবং কম্ফোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমার কাছে । এ সব কিছু বিবেচনায় এনে আমার কাছে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর সিবিএস ভার্শনটা এই সেগমেন্টের যেকোনো বাইকের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হয়েছে।

cb hornet 160r cbs rear view

এরই মাঝে "পঞ্চম ঢাকা বাইক শো ২০১৯" তে Honda CB Hornet 160R CBS সামনাসামনি খুব ভালোভাবে দেখার সৌভাগ্য হয়। তখনো বাইক চালাতে পারিনা ঠিকঠাক এবং একইসাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলনা বলে টেস্ট রাইড দেওয়ার সাহস করে উঠতে পারিনি। সামনাসামনি দেখতে বাইকটা কে ছবির থেকেও আকর্ষনীয় লেগেছে আমার কাছে। ফাইনালি ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আমি ডিসিশন ফাইনাল করে ফেলি , Honda CB Hornet 160R CBS ভার্সনটি আমি আমার জীবনের প্রথম মোটরবাইক হিসেবে বাসায় নিয়ে আসবো। মিরপুর কাজীপাড়া তে অবস্থিত হোন্ডার অফিশিয়াল স্বনামধন্য ডিলার "করিম মটরস" থেকে দুইলক্ষ একহাজার আটশো টাকা দিয়ে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর সিবিএস ভার্শনটা কিনে ফেলি। আমি তখনো বাইক চালাতে পারিনা বিধায় আমার বন্ধু আসিফ বাইক চালিয়ে বাসা পর্যন্ত দিয়ে যায়। কিন্তু নতুন বাইক, অনেকদিনের স্বপ্ন হাতের মুঠোয় পেয়ে সেটা ফেলে রাখা অনেকটা অসম্ভব ব্যাপার বলা যায়। বিকেলবেলাতেই বাইক টা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি। আমি তখনো বাইক চালানোর বেসিক জিনিস গুলা জানি শুধুমাত্র । যখন এক্সিলারেটরে হাত রেখে ঘুরাচ্ছিলাম, আর বাইক এগিয়ে যাচ্ছিলো স্মুথ একটা সাউন্ড করে, এই স্মৃতিটা আজ একবছর পরেও একদম অম্লান ।

cb hornet 160r cbs user with helmet

প্রথমবারের মত তেল নেওয়ার অভিজ্ঞতাটা না বললেই নয়। ক্লাচ আর এক্সিলারেটরের কম্বিনেশন ঠিকঠাক রপ্ত না করতে পারায় রাস্তায় বারবার বাইক অফ হয়ে যাচ্ছিলো, আর পিছে বিশাল জ্যাম বাধিয়ে ফেলেছিলাম সেদিন বারবার করে । আমি ক্ষমাপ্রার্থী সেদিন আমার পিছে থাকা যানবাহন গুলোতে থাকা সবার কাছে । মিরপুর-১৪ থেকে মিরপুর-১ গিয়ে তেল নিয়ে আবার ফিরে আসতে সময় নিয়েছিলাম প্রায় দুঘণ্টা । আমার বাইকের বয়স ১ বছর হতে চলছে আর এই ১ বছরে ১০ হাজার তিনশত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছি সিবি হর্নেটের সাথে । বেশ কয়েকটা হাইওয়ে রাইডের পাশাপাশি চালিয়েছি ঢাকার ব্যাস্ত রাস্তাগুলোতে । বাইক কেনার পরপরই একজন শ্রদ্ধেয় বড় ভাই ফিরোজ মেহেদী শিশির ভাইয়ের সাহায্যে বাইকের টুকটাক যত্ন নেওয়া যেমন স্পার্ক প্লাগ ক্লিনিং, টাইমিং চেইন ক্লিনিং, এয়ার ফিল্টার ক্লিনিং যেসব শিক্ষা আমাকে এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

  cb hornet 160r cbs with owner

এবার হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর সিবিএস ভার্শনের স্পেসিফিকেশন 

বাইকটিতে ১৬২.৭ সিসির ফোর স্ট্রোক এয়ার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে যা কিনা ১৫.১ হর্স পাওয়ার এবং ১৪.৭৬ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম । একই সাথে ইঞ্জিনটি HET(Honda Eco Technology) এর আওতাভুক্ত। ৫ স্পিড গিয়ার বক্স রয়েছে এতে, এবং MRF ব্রান্ডের টিউবলেস টায়ার ব্যবহৃত হয়েছে। সামনে ১০০ সেকশন এবং পিছে ১৪০ সেকশনের টায়ার ব্যবহৃত হয়েছে। সিবিএস ভার্শনে পিছনের ব্রেক ২২০ মিলিমিটারের ডিস্ক এবং সামনে ২৭৬ মিলিমিটারের ডিস্ক ব্রেক ব্যবহৃত হয়েছে। X-শেইপের এলইডি টেইল লাইট রয়েছে এতে, যেটা কিনা বাইকটির লুক কে অনেকটা এগ্রেসিভ করে তুলেছে। সামনে টেলিস্কোপিক সাস্পেনশন এবং পিছে মনোশক সাস্পেনশন ব্যবহৃত হয়েছে। ফুললি ডিজিটাল স্পীডোমিটার ইউজ করা হয়েছে এতে, এবং মিটারে স্পীড, ফুয়েল স্টেট, আরপিএম কাউন্ট, টোটাল মাইলেজ শো করে। পিলিওন সিট এই সেগমেন্টের যেকোনো বাইকের তুলনায় কম্ফোর্টেবল লেগেছে এবং গ্র‍্যাব রেইলটা মজবুত একইসাথে দৃষ্টিনন্দন। মাস্কুলার লুক বাইকটিকে অনন্য করে তুলেছে।

cb hornet 160r cbs side view with user

১০ হাজার কিলোমিটারের অধিক পথ পরিক্রমায় বাইকের যেসব জিনিস পরিবর্তন করতে হয়েছেঃ

  • এয়ার ফিল্টার একবার।
  • স্পার্ক প্লাগ একবার।
  • হেডলাইট চেইঞ্জ করে এলইডি হেডলাইট ইন্সটল করেছি।
  • ইঞ্জিন লুব্রিকেন্ট সময়মত।

সার্ভিসিংঃ বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড রিকোমেন্ড করে ১০ হাজার কিলোমিটারের মাঝেই ৪ টি ফ্রি সার্ভিস গ্রহন করতে। তাই ইতোমধ্যেই ৪ টি ফ্রি সার্ভিস গ্রহন করেছি, প্রতিটিই হোন্ডার অফিশিয়াল ডিলারের নিকট থেকে। প্রতিটি সার্ভিস নিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট। প্রতিবারই আমি ছোটখাটো যেসব সমস্যার কথা বলেছি, তারা গুরুত্বের সাথে প্রতিটি সমস্যার সমাধান করেছেন। 

ইঞ্জিন ওয়েলঃ ইঞ্জিন লুব্রিকেন্টের ব্যাপারে যদি বলি, প্রথম দিকে হোন্ডার নিজস্ব মিনারেল 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করলেও বারবার ইঞ্জিন ওয়েল বদলানোর ঝামেলা এড়াতে রেপসল ফুল সিন্থেটিক 10w30 ব্যবহার শুরু করি। ৮৫০ টাকার এই ইঞ্জিন ওয়েল ২৫০০ কিলোমিটার+ পর্যন্ত ভালো সাপোর্ট দেয়। আলহামদুলিল্লাহ ভালো সার্ভিস পাচ্ছি।

  cb hornet 160r cbs front view

মাইলেজঃ ঢাকার ব্যস্ত রাস্তায় জ্যামের মাঝে ৩৭-৩৮ কিলোমিটার/লিটার মাইলেজ পাই, হাইওয়েতে ৪২-৪৩ কিলোমিটার/লিটার মাইলেজ পাই। যা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। যদিও শুরুতে ভালো মাইলেজ পেতাম না, দ্বিতীয় সার্ভিসের পর মাইলেজ বেড়ে যায়। তাই আমি বলবো সময়মত সার্ভিস নিয়ে মাইলেজ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে সেটা সমাধান করে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

মোডিফিকেশনঃ যেহেতু আমার বাইকের কালার রেজিস্ট্রেশন সনদে "গ্রে কালার", তাই আমি সহজেই "স্ট্রাইকিং গ্রীন" স্টিকার বদলে ফেলে কমলা কালারের স্টিকার ব্যবহার করছি নিয়ম মেনেই। আর হ্যান্ডেলবার চেইঞ্জ করে "এফজেড এস" বাইকের হ্যান্ডেলবার লাগিয়েছি যেটা কিনা কর্নারিং এ আরেকটু বেটার কনফিডেন্স দিচ্ছে।

Honda CB Hornet 160R টেস্ট রাইড রিভিউ – টিম বাইকবিডি

টপ স্পিডঃ ঢাকার রাস্তাগুলো মোটেই টপ স্পীডে বাইক রাইডের উপযোগী নয় বরং এটা অনেকটাই বিপদজনক। আমি খুবই শান্তশিষ্ট রাইডার, তাই ঢাকার রাস্তায় টপ স্পীড চেক করিনি। হাইওয়ে রাইডগুলোতে টপ স্পীডে চালানো হয় মাঝেমধ্যেই। সর্বোচ্চ ১২১ কিলোমিটার/ঘন্টা গতিবেগে চালিয়েছি, আরোও স্পীড তোলা সম্ভব বলে আমি মনে করি। তবে হাই স্পীডে হর্নেটের স্ট্যাবিলিটি আমাকে মুগ্ধ করছে। একইসাথে সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম কনফিডেন্স কে যথেষ্ট স্ট্রং করে দিয়েছে।

  cb hornet 160r cbs striking green user with black helmet

আমার চোখে দেখা হর্নেট ১৬০আর সিবিএস ভার্শনের ৫টি মন্দ দিকঃ

  • চেইন সাউন্ড বেশ বিরক্তিকর। লুবিং করার দুইদিনের মধ্যেই চেইন শুকিয়ে পুনরায় বিরক্তিকর সাউন্ড শুরু করে।
  • প্লাস্টিক বডি আরোও কিছুটা মজবুত হতে পারতো।
  • এই সেগমেন্টের যেকোনো বাইকের তুলনায় কিছুটা ধীরে স্পীড গেইন হয়। যদিও এই ব্যাপারটা আমার কাছে সেইফ ড্রাইভিং এর পূর্বশর্ত মনে হয়।
  • ইঞ্জিন সাউন্ডটা আরেকটু উন্নত হওয়ার দাবী রাখে।
  • গিয়ারবক্স কিছুটা আপগ্রেডেশনের দাবী রাখে।

আমার চোখে দেখা হর্নেট ১৬০আর সিবিএস ভার্শনের ৫টি ভালো দিকঃ

  • মাস্কুলার লুক এবং কনফোর্টেবল সিটিং পজিশন।
  • বেটার মাইলেজ এবং হাইস্পীড স্ট্যাবিলিটি।
  • Combi Brake এর অসাধারণ পারফরমেন্স অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।
  • মোটা রেয়ার টায়ার হওয়াতে হাই স্পীড, লো স্পীড এবং পিচ্ছিল রাস্তায়ও যথেষ্ট কনফিডেন্স পাওয়া যায়।
  • বাইকটির টার্নিং রেডিয়াস সিটি তে রাইডিং এর জন্য পারফেক্ট মনে হয়েছে।

cb hornet 160r cbs user besides a river 

এ পর্যায়ে আমার একটি লং রাইডের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি। ৭৯১ কিলোমিটারের দুইদিনের লম্বা ট্যুরে ঢাকা-শ্রীমঙ্গল-সিলেট-ঢাকা কাভার করি হর্নেট সিবিএস ১৬০আর এর সাথে। জীবনের অন্যতম সেরা একটি অভিজ্ঞতা ছিল এটা। ওই ট্যুরে চা বাগানের ভেতর দিয়ে, ঘন জঙ্গলের ভেতর পিচঢালা পথ ধরে, পাথুরে বেলে মাটির রাস্তা ধরে Honda CB Hornet 160R CBS এর সাথে পাড়ি দিয়ছি বেশ লম্বা একটা পথ। সব ধরনের রাস্তায় হর্নেটের দারূন রেসপন্স নিয়ে আমি বেশ খুশি। পরিশেষে বলবো নতুনদের জন্যে তো অবশ্যই, বাইকটি সব বয়সের এবং সব ধরণের রাইডার দের জন্যে হতে পারে ফুলফিল একটা প্যাকেজ। অন্তত আমার এই ১০হাজার কিলোমিটার পার করার অভিজ্ঞতা আমাকে এটাই বলে। হ্যাপী বাইকিং। রাইড সেইফ।   লিখেছেনঃ নাজমুস সাকিব   আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

View all Upcoming Bikes