Shares 2

Bajaj Pulsar N250 টেস্ট রাইড রিভিউ - টিম বাইকবিডি

Last updated on 29-Apr-2024 , By Raihan Opu Bangla

বাংলাদেশে বাইকপ্রেমীদের মাঝে বিশেষ ভাবে ২০০০ সালের পর থেকে যারা বাইক রাইড করেন তাদের কাছে Pulsar একটি আবেগের নাম। কারণ ২০০০ সালের পর সিসি লিমিটেশনের কারনে উচ্চ সিসির বাইক আসা বন্ধ হয়ে যায়। তখন ১৫০সিসি সেগমেন্টে বাজাজ পালসার মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে একটি অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসে। সম্প্রতি বাংলাদেশে  উচ্চ সিসির অনুমতি দেয়ার পর উত্তরা মোটরস লিমিটেড পালসার প্রেমীদের জন্য নিয়ে এসেছে উচ্চ সিসির Bajaj Pulsar N250। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি Bajaj Pulsar N250 টেস্ট রাইড রিভিউ

পালসার এই নামটির সাথে ছোট বড় সকল বাইকপ্রেমী পরিচিত। তাদের সকলের মুখে মুখে এই নামটি উচ্চারিত হয়। যখনই বাংলাদেশে ১৫০সিসি সেগমেন্টে কোন মোটরসাইকেলের কথা বলা হয় সবাই এক বাক্যে পালসারের নামটি নিয়ে থাকেন। 

বাজাজ পালসার শুধু মাত্র একটি মডেল নয়। এই বাইকটি বাইকার ও বাইকপ্রেমীদের কাছে একটি আবেগের নাম। এই নামটির সাথে অনেক বাইকপ্রেমীর আবেগ ও অনুভূতি জড়িয়ে আছে। অনেকে কাছেই স্বপ্নের বাইকও ছিল বাজাজ পালসার। সেই পালসার যুগের সাথে আধুনিক হয়েছে। ১৫০সিসি সেগমেন্টে পালসারের অনেক গুলো ভার্সন রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে উচ্চ সিসির Bajaj Pulsar N250 ও চলে এসেছে।

স্টাইল, ডিজাইন, লুকস ও গ্রাফিক্স

আগে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারী। বাংলা এই প্রবাদ আমরা অনেকেই জানি। বাজাজ পালসারের ডিজাইন নিয়ে লুকস নিয়ে যদি বলা হয়ে থাকে তবে বাজাজ সময়ের সাথে সাথে বাজাজের ডিজাইনেও নতুনত্ত্ব এসেছে। একটা সময় স্টাইলিশ বাইক হিসেবে বাজাজ পালসারের সুনাম ছিল। সেটি এখনও বজায় রেখেছে। 

Bajaj Pulsar N250 বাইকটির ডিজাইন অনেক এগ্রেসিভ। বাইকটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এর এগ্রেসিভনেস ধরে রেখেছে। ডিজাইনের দিক থেকে বাইকটি বেশ মাসলফুল বলা যায়। লুকসের ক্ষেত্রে বাইকটি বাংলাদেশে এগ্রেসিভ লুকসের যেকোন বাইকের চেয়ে বেশ এগিয়ে থাকবে। 

সামনে দিক থেকে বেশ রোবোটিক লুকস ও ডিজাইন দেখা যায়। আপনি প্রথম দেখলে অনেক আপনার কাছে বাইকটি নিজের স্বকীয়তা তুলে ধরতে সক্ষম হবে। এছাড়া বাডি প্যানেলে আপনি থ্রিডি লোগো যুক্ত পালসারের এম্বেলেম দেখতে পাবেন। যা পালসারের সিনেচার স্টাইল।

ইঞ্জিন ও পাওয়ার

বাজাজ পালসারের ইঞ্জিন নিয়ে কোন কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। বাজাজ সব সময় ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। এই বাইকটিতে মুলত ব্যাবহার করা হয়েছে একটি ২৪৯সিসি এর ওয়েল কুল্ড SOHC ২ ভাল্ব এফআই (ফুয়েল ইঞ্জেকশন) ইঞ্জিন।

এই ইঞ্জিন থেকে সর্বোচ্চ ২৪.৫ বিএইচপি পাওয়ার @ ৮৭৫০ আরপিএম এবং ২১.৫ এনএম টর্ক @ ৬৫০০ আরপিএম উৎপাদন করতে সক্ষম। বুঝতেই পারছেন এই বাইকটি একটি পাওয়ারফুল বাইক। 

ইঞ্জিনের সক্ষমতা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে বাইকটি আপনাকে যেকোন পরিস্থিতে সহায়তা করবে। আপনি হাইওয়ে বা, পাহাড় অথবা শহরে যেকোন জায়গাতে খুব সহজে রাইড করতে পারবেন। 

হুইল, ব্রেক ও সাসপেনশন

পালসার এন২৫০ বাইকটির নেকেড স্পোর্টস বাইকের ক্ষেত্রে এই সেগমেন্ট বর্তমানে এগিয়ে থাকবে। এই বাইকটির হুইল বা চাকার দিয়ে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে সামনের দিকে এই বাইকটিতে দেয়া হয়েছে ১০০/৮০-১৭ সেকশনের টায়ার এবং রেয়ারে দেয়া হয়েছে ১৩০/৭০-১৭ সেকশনের টায়ার। 

বাজাজ তাদের ব্রেকিং সিস্টেমেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বাজাজ বাইব্রি এর পরিবর্তে গ্রীমিকা ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করেছে। এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস। 

অপরদিকে সামনের দিকে দেয়া হয়েছে ৩৭মিমি টেলিস্কোপি ফর্ক সাসপেনশন এবং রেয়ারে দেয়া হয়েছে মনোশক সাসপেনশন। তবে মনোশকে কোন ধরনের গ্যাসচার্জড ক্যানিস্টার দেয়া হয়নি। 

ফিচার্স ও টেকনোলজি

বর্তমানে সব মোটরসাইকেল প্রযুক্তি গত দিক থেকে অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে। এখন সব ধরনের মোটরসাইকেলে আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাজাজ পালসার এন২৫০ বাইকটি কোন ভাবে পিছিয়ে নেই। 

এন২৫০ বাইকটিতে দেয়া হয়েছে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস, এসিস্ট স্লিপার ক্লাস, এলইডি পার্কিং লাইটস, এলইডি প্রোজেকশন হেডলাইট, এলইডি সাইড ইন্ডিকেটর সহ অনেক নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। এর সাথে রয়েছে সেমি ডিজিটাল ড্যাশবোর্ড বা মিটার কনসোল। এই কনসোলে আপনি আরপিএম, স্পিড, গিয়ার ইন্ডিকেটর, ডিস্টেন্স টু ইন্ড, ঘড়ি সহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দেখা যায়।

এছাড়া বাইকটিতে দেয়া হয়েছে ১৪ লিটারের ফুয়েল ট্যাঙ্ক, যা মোটামুটি বেশ বড় বলা যায় । স্প্লিট সিট, স্যাডেল হাইট হচ্ছে ৭৯৫মিমি, এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে ১৬৫মিমি। আরো দেয়া হয়েছে পাইপ হ্যান্ডেল বার।

সব মিলিয়ে বাইকটির ওজন মাত্র ১৬২ কেজি ও বাইকটির ওয়েট ব্যালন্স সেন্ট্র্যালাইজড।

রাইডিং অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশে ১৫০সিসি সেগমেন্টে অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল বাজাজ পালসার। তাদের ডিজাইন লুকস ও স্টাইলে এক চেটিয়া রাজত্ব্য করেছে। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বাজাজ তাদের মোটরসাইকেলেরও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। থ্রি পার্ট হ্যান্ডেল বার, আধুনিক প্রযুক্তি, সহ ডিজাইন ও স্টাইলেও পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। 

বাজাজ পালসার ১৫০ থেকে আজকের বাজাজ পালসার এন২৫০ বাইকটি প্রতিটি ধাপে ধীরে ধীরে পরিবর্ততি হয়ে এসেছে। এছাড়া এন২৫০ বাইকটির আগে বাজাজ এন১৬০ বাইকটি বাংলাদেশে লঞ্চ করা হয়। 

ডিজাইন ও স্টাইলের দিক থেকে দুটো বাইক একই রকম। আপনি সামনে থেকে প্রথমবারে বাইক দুটিকে আলাদা করতে পারবেন না। আমার মনে হয় বাজাজ এই জায়গাতে কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারত। এতে করে বাইকারদের আরও আকর্ষণ তৈরি হত। যেহেতু দুটো বাইক দেখতে একই রকম তাই এটা কিছুটা হলেও হতাশাজনক বলা যায়। 

ইঞ্জিনের পাওয়ারের ক্ষেত্রে বাইকটি কিছুটা হলেও বাইকারদের প্রত্যাশা পূরণ করেছে বলে বলা যায়। বাইকটি এফআই হওয়া স্বত্ত্বেও এর র পাওয়ার আপনি অনুভব করতে পারবেন। শহর বা হাইওয়ে দু জায়গাতেই বাইকটি দারূণ পারফর্ম করতে সক্ষম। 

বিশেষ ভাবে হাইওয়েতে বাইকটির পারফর্মেন্স বেশ দারূণ ভাবে উপভোগ্য। হাইওয়েতে বাইকটির পাওয়ার লস বা পারফর্মেন্স এর কমতি দেখা যায়নি। 

এছাড়া এর এসিস্ট স্লীপার ক্লাচ এক্সেলারেশনে বেশ সহায়তা করেছে। বাইকটি এর কারনে বেশ দ্রুত গতি তুলতে সক্ষম। 

অপরদিকে হ্যান্ডেলিং এর ব্যাপারে বলতে হবে। বাইকটিতে কনভেনশনাল পাইপ হ্যান্ডেলবার দেয়া হয়েছে। হ্যান্ডেলবারটি কিছুটা স্পোর্টি রাখা হয়েছে। স্পোর্টি হবার পরও বাইটি ম্যানুভার করতে আপনার কোন ধরনে সমস্যা হবে না। 

শহরের জ্যাম হোক বা হাইওয়ে দুই জায়গাতেই বাইকটি কন্ট্রোল করতে আমার কোন সমস্যা হয়নি। বরং নেকেড হলেও বেশ সহজেই বাইকটি রাইড করা গিয়েছে। বিশেষ ভাবে শহরে রাইড করা সময় আপনার কোন সমস্যা হবে না। হ্যান্ডলবারের কারণে ছোট ছোট গ্যাপ দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। 

ব্রেকিং ও সাসপেনশনের কথা যদি বলতে হয় তবে ব্রেকিং পারফর্মেন্স অসাধারাণ না হলেও বাইকটির পারফর্মেন্সে সেটা বোঝা যায়নি। তবে বাইব্রি থেকে গ্রীমিকা নতুন ভাবে যুক্ত করা হয়েছে। যেটা বেশ অবাক করেছে। আমরা মনে হচ্ছে বাজাজের বাইব্রিতেই আবার ফিরে যাওয়া উচিত হবে। যদিও গ্রীমিকার পারফর্মেন্স একদম খারাপ তা বলা যায় না। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বেশ ভাল বলা যায়। 

এছাড়া এর ডুয়েল চ্যানেল এবিএস এর কারনের বাইকটির ব্রেকিং আরও দারূণ হয়েছে। এবিএস আপনাকে বেশ ভাল একটি ফিডব্যাক প্রদান করবে।

এর সঙ্গে সাসপেনশনের কথা না বললেই নয়। সামনের দিকের টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন আপনার ভাঙ্গা রাস্তায়ও বেশ ভাল ফিডব্যাক দিয়েছে। কিন্তু রেয়ার সাসপেনশন কিছুটা হার্ড। তবে আমার মনে হয় প্রথম দু তিন সার্ভিসের পর এটা ঠিক হয়ে যাবে। 

টায়ারের ক্ষেত্রে কিছু কথা থেকেই যায়। কারণ বাংলাদেশের বাইকারদের মাঝে একটি ধারণা রয়েছে মোটা চাকার। এই বাইকটির সামনের দিকে ১০০/৮০-১৭ সেকশনের টায়ার দেয়া হয়েছে। যা বেশ উপযুক্ত মনে হয়েছে। তবে রেয়ারে দেয়া হয়েছে ১৩০/৭০-১৭ টায়ার। আমার মনে হয় এই জায়গাতে বাজাজের কাজ করা উচিত। এখানে আরও এক সাইজ বড় টায়ার দেয়া যেত বলে আমার মনে হয়। 

এবার অনেকেই ভাবতে পারেন যে মাইলেজ কত হতে পারে। দেখুন এই বিষয়টি মুলত রাইডিং, রাইডার, ও পারিপার্শ্বিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে থাকে। এই বাইকটিতে দেয়া হয়েছে ১৪ লিটারের ফুয়েল ট্যাঙ্ক তাই দূরের যাত্রায় আপনার তেমন কোন সমস্যা হবে। 

কিন্তু যেহেতু এটি একটি উচ্চ সিসির মোটরসাইকেল তাই আপনি চাইলেও এর কাছ থেকে বেশি মাইলেজ প্রত্যাশ করতে পারেন না। 

আমি যখন রাইড করেছি তখন এই বাইকটি থেকে শহরে ৩০ থেকে ৩২ কিলোমিটার প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে ৩২ থেকে ৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি। 

মাইলেজের হিসেবে বলতে হয় এটা কম। তবে আপনাকে এটাও বুঝতে হবে এটি একটি উচ্চ সিসির আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একটি মোটরসাইকেল। তাই মাইলেজ কম হওয়া স্বাভাবিক। 

এবার আসা যাক Bajaj Pulsar N250 বাইকটির কিছু পজেটিভ ও নেগেটিভ দিক নিয়ে – 

পজেটিভ দিক

  • পাওয়ার ফুল ইঞ্জিন
  • ডুয়েল চ্যানেল এবিএস
  • পাওয়ারফুল হেডলাইট
  • সাসপেনশন

নেগেটিভ দিক

  • বাইকের লুকস ও ডিজাইন
  • রেয়ার টায়ার
  • লুকিং গ্লাস

বাইকটি বর্তমানে বাংলাদেশে তিনটি কালারে পাওয়া যাচ্ছে ব্রুকলিন ব্ল্যাক, রেসিং ও ক্যারাবিয়ান ব্লু। বর্তমানে বাইকটির দাম হচ্ছে ৩,৩৯,৯৯৯ টাকা। 

এই দামে বর্তমানে এমন একটি পাওয়াফুল বাইক পাওয়া সত্যি অসাধারণ একটি ব্যাপার। আপনি যদি নেকেড স্পোর্টস লাভার হয়ে থাকেন তবে এই বাইকটি আপনার জন্য একটি দারূন অপশন হতে পারে। 

আমাদের এই টেস্ট রাইডে সহযোগিতা করেছে মবিল বাংলাদেশ, গিয়ারএক্স বাংলাদেশ, টোটাল টুলস, ট্র্যাকার্স বিডি, মটোম্যাক্স বিডি, এপোলো টায়ার বাংলাদেশ, ওয়েদার বাংলাদেশ। 

আমরা আপনারদের জন্য আরও নতুন নতুন মোটরসাইকেলের টেস্ট রাইড নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতে পারব। সেই পর্যন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন ও নতুন সব মোটরসাইকেলের ব্র্যান্ড, দাম জানতে আমাদের ওয়েব সাইট www.bikebd.com ভিজিট করুন। ধন্যবাদ। 

Published by Raihan Opu Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

QJ Motor SRC 250

QJ Motor SRC 250

Price: 0.00

QJ Motor SRC 500

QJ Motor SRC 500

Price: 0.00

Seeka SBolt

Seeka SBolt

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS400Z

Bajaj Pulsar NS400Z

Price: 460000.00

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes