Yamaha FZS FI V3 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - উপানন্দ চন্দ্র

This page was last updated on 18-Nov-2023 11:10am , By Shuvo Bangla

আমি উপানন্দ চন্দ্র বর্মন । আমি গাজীপুর বসবাস করি । Yamaha FZS FI V3 বাইক নিয়ে রয়েছে অনেক স্মৃতি যা আজ আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করবো ।

 yamaha fzs fi v3

আমি মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। আমার ১ম বাইক চালানো শুরু TVS METRO দিয়ে। বাইকের প্রতি ছোটবেলা থেকেই আলাদা ভাবে ভালবাসা ছিল কিন্তু আর্থিক অবস্থার কারনে তা হয়ে উঠেনি। যা হোক বিয়ে-শাদি করার পর সন্তানের স্কুলে যাতায়াতের খুব সমস্যার কারনে ১ম বাইকটি কিনেছিলাম।

এরপর কিছুদিন চালিয়ে সেটি বিক্রি করে একসময়ের রাস্তার রাজা PULSAR TD নেই। এই বাইকটিও ২.৫ বছর চালিয়ে বিক্রি করে দেই। এরমধ্যে আমার কয়েকটি জেলা ঘুরাঘুরি শেষ করেছি। এরপর অনেক যাচাই বাছাই করে আমি আমার বর্তমান বাইকটি ইয়ামাহার শোরুম থেকে ক্রয় করি। আজকে আমার বাইকের ২৪,০০০ কিলোমিটার রাইডের ছোট্ট একটি রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

এই বাইকটির সাথে আমার পথচলা শুরু হয় ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে। বাইকের প্রতি অনেক ভাললাগা রয়েছে বাইক নিয়ে ঘুরতে অদম্য নেশা। তাই যখনি সময় পাই বাইক নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যাই।

yamaha fzs fi v3

Yamaha FZS FI V3 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • বাইকটি কমিউটার সেগমেন্ট এ তৈরি এবং কমফোর্ট সিটিং পজিশনের একটি বাইক।
  • বাইকটিতে রয়েছে ৫টি গিয়ার ট্রান্সমিশন
  • ইঞ্জিন ভাইব্রেশনের কম পাওয়া যায়।
  • হাইওয়েতে কম্ফোর্ট ভাবে চলার জন্য আমার কাছে যথেস্ট মনে হয়েছে।
  • পারফেক্ট ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশনের কারনে ভারী বাতাসেও হাইওয়েতে সমানভাবে বাইকটি রাইড করা যায়।
  • মাইলেজ, হাইওয়েতে প্রায় ৪৮/৫০ প্রতি লিটারে এবং সিটি রাইডে ৪৩/৪৪ প্রতি লিটারে পাওয়া যায়।
  • বাইকটিতে রয়েছে LED হেডলাইট যার ফলে যথেষ্ট আলো সরবরাহ করে যা রাতে রাইডের ক্ষেত্রে মোটামুটি উপযোগী।
  • বাইকটির ব্রেকিং কন্ট্রোলিং যথেস্ট ভালো আর সামনের চাকায় এবিএস ব্রেকিং থাকার ফলে বাড়তি কনফিডেন্স পাওয়া যায়।

Yamaha FZS FI V3 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • এই সেগমেন্ট এর বাইকে তুলনামূলক ভাবে এটার পাওয়ার অনেক কম।
  • বিল্ড কোয়ালিটি কিছুটা দূর্বল
  • বাইকটিতে এয়ার কুলিং থাকার ফলে একটানা রাইডে ইঞ্জিন হিটিং হয় অনেক
  • পেছনের চাকার ব্রেকিং কন্ট্রোলিং কিছুটা কম মনে হয়েছে সামনের চাকার তুলনায়।
  • স্টক হর্ণের আওয়াজ অনেক কম।

বাইকটির রাইডিং পারফরমেন্স নিয়ে কিছু ব্যাক্তিগত অভিমত-
বাইকটি দিয়ে আমি ইতিমধ্যে কক্সবাজার, বান্দরবান, তিন্দু, থানচি, রাংগামাটি, খাগড়াছড়ি, সিলেট, মিঠামইন,গজনী, বিরিশিরি, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, তেতুলিয়া আশেপাশের জেলাসহ আরো অনেক জায়গাগুলোতে গিয়েছি। লং ট্যুরের জন্য বলা যায় পারর্ফেক্ট একটি বাইক এটি। এখন পর্যন্ত আমাকে হতাশ করেনি এই বাইকটি, সব ধরনের রোড কন্ডিশনে ভালো সাপোর্ট দিয়েছে।

আমি সর্বোচ্চ একটানা প্রায় ২০০ কিলোমিটার রাইড করেছিলাম। এয়ার কুলিং হওয়া সত্বেও একটানা রাইডে ভালো সাপোর্ট পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমি বাইকটিতে স্পেয়ার পার্টস শুধুমাএ চেইন স্পোকেট, ব্রেক প্যাড, বল রেসার, অয়েল সিল একবার করে পরিবর্তন করা করেছি। এছাড়া নিয়মিত নির্দিস্ট সময় পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা হয়েছে।

প্রথম সার্ভিসসহ সবগুলো সার্ভিস ইয়ামাহা কোম্পানির রিকমেন্ড অনুযায়ী সময়মত করিয়েছি, যার ফলে এ পর্যন্ত কোন বড় সমস্যার সম্মুখীন হইনি। আমি ইয়ামালুব ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । এই বাইকটিতে লিকুইড কুলিং যদি দেওয়া হত তাহলে দাম বিবেচনায় একদম পারর্ফেক্ট হত। পরিশেষে সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই সবাই সাবধানে, সতর্কতার সাথে, উচ্চ গতি পরিহার করে, অবশ্যই হেলমেট পরে বাইক রাইড করবেন। ধন্যবাদ ।

 

লিখেছেনঃ উপানন্দ চন্দ্র বর্মন

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।