মোটরসাইকেল ট্যুর - একদিনে ৫ জেলা ভ্রমন কাহিনী । বাইকবিডি

This page was last updated on 13-Jul-2024 06:08pm , By Ashik Mahmud Bangla

আমি আশিক মাহমুদ, একজন বাইকপ্রেমী এবং ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। সুযোগ পেলে নিজের বন্ধু এবং ভাইদের সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসি। আর ভ্রমনের গল্পগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে খুব পছন্দ করি। আজকের গল্পটা আমার একা রাইডের গল্প। গল্পটা একদিনে ৫ টি জেলা ভ্রমনের গল্প। পুরো গল্প জুড়েই থাকছে নতুন কিছু অভিজ্ঞতার বর্ননা, যারা একা রাইড করতে পছন্দ করেন তাদের এই গল্পটা হয়তো কিছুটা কাজে দিবে। চলুন শুরু করি মোটরসাইকেল ট্যুর - একদিনে ৫ জেলা ভ্রমনের গল্প ।

মোটরসাইকেল ট্যুর - একদিনে ৫ জেলা ভ্রমন কাহিনী । বাইকবিডি

motorcycle-tour-tipes

   

আমার গল্পটা এই বছরের জানুয়ারি মাসের,শীতকালীন ট্যুর মানেই অন্যরকম এক ব্যাপার। অনেকদিন ধরে ব্যস্ততার কারনে কোন ট্যুর দেয়া হয় না আমার,তাই এবার ঠিক করলাম একটা মোটরসাইকেল ট্যুর এ বের হবো। তবে এবারের ট্যুরটা দিবো আমি একা, আর যেই যেই জেলায় যাবো সেই জেলাগুলোর পরিচিত বাইকার ভাই-ব্রাদারের সাথে দেখাও করবো। টীম নিয়ে রাইডে গেলে সবার সাথে দেখা করা হয় না সময় কম থাকার কারনে, কিন্তু এবার দেখা করতে চাই সবার সাথে।

মোটরসাইকেল ট্যুর - ঢাকা -ফরিদপুর - ঝিনাইদাহ

২৪ জানুয়ারি সকাল বেলা ব্যাগ গুছিয়ে ফেললাম,আর রুট প্লানটাও সাজিয়ে নিলাম নিজের মতোন করে। বিকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে রওনা করলাম। সবার প্রথমে চলেন বাইকের ট্যাংক ফুল লোড করে নেয়া যাক,তারপর যাত্রা শুরু করবো। ট্যাংক ফুল করা শেষ, বাইকের চেকাপ করানো শেষ এবার মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি গাবতলীর দিকে।

motorcycle-tour-tips

   

চলে আসলাম গাবতলীতে এবার ঢাকা আরিচা সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে লাগলাম। নবীনগরে এসে ছোট্ট একটা বিরতি নিলাম। ঠান্ডা লাগছে জ্যাকেটটা পরে নিয়ে এককাপ চা পান করে যাত্রা শুরু করবো। এবার যাত্রা শুরু করার পালা,ওহ এখানে চা নাস্তা করতে খরচ হলো মাত্র ২০ টাকা। নবীনগর দিয়ে সোজা চলে গেলাম ধামরাই, ধামরাই থেকে এবার মানিকগঞ্জ,এবার একটু বিরতি নিবো,রাস্তায় হাল্কা জ্যাম ছিলো তাই রাত হয়ে গেলো। এখানে নাস্তা শেষ করে এগিয়ে যাবো পাটুরিয়া ফেরী ঘাটের দিকে। নাস্তা করতে খরচ হলো ৪০ টাকা।

Also Read: ১০৫২ কিলোমিটার বাইক ট্যুর লিখেছেন ইসমাম ভূইয়া

শীতের রাত তাই খুব বেশি গতিতে যাচ্ছি না ৬০-৭০ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি গন্তব্যের দিকে। ফেরী ঘাটে চলে আসলাম ঘাট ফাকা তাই সরাসরি ফেরীতে উঠে গেলাম। ফেরীতে উঠে গরম গরম ডিম খেয়ে নিলাম, শীতের রাত ভালোই লাগছে পুরো ভ্রমনটা। ফেরীতে ডিমের মূল্য ১৫ টাকা। ফেরী থেকে নামার সময় হয়ে গেছে ৩৫ মিনিট সময় লাগলো। ফেরী থেকে নেমে এগিয়ে যাচ্ছি গোয়ালন্দ মোড়ের দিকে। ভালো দুটা ফগ লাইটের উপকারিতা এখন বুঝতে পাচ্ছি। গোয়ালন্দ মোড়ে চলে আসলাম,যেহেতু রাত হয়ে গেছে তাই আজ রাতটা ফরিদপুরেই থাকবো। চলে আসলাম ফরিদপুর ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে ঘুম। মুল যাত্রা শুরু হবে সকালে।

  

high-way-riding-tips

 

২৫ জানুয়ারি সকাল বেলা প্রথমে নিজের শহরটা ঘুরে নিলাম। ভালোই লাগলো শীতের সকালে নিজের শহরটা ঘুরে দেখত ভালোই লাগলো। চলে গেলাম ফরিদপুর-ঢাকা সড়কটি ধরে যাচ্ছি রাজবাড়িতে,গোয়ালন্দ মোড় পর্যন্ত খুব দ্রুত চলে গেলাম,রাস্তা ভালো হলে যা হয় আর কি। বাইকার ভাইদের এই সড়কে ঘুরতে আসার আমন্ত্রন রইলো, খুব মজা পাবেন বাইক রাইড করে। 

গোয়ালন্দ মোড় দিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম রাজবাড়ির মধ্যে। শুরু হয়ে গেলো রাইডিং এর পরীক্ষা,মানে সেই জঘন্য রাস্তা। সামনের দিকে যতো এগিয়ে যাচ্ছি ততোই রাস্তা খারাপ হচ্ছে। রাস্তার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সড়ক ব্যবহার না করায় উত্তম। বাইকের প্রচুর ক্ষতি হবে সাথে দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে। যাই হোক বের যেহেতু হলাম শেষটাও দেখে নেয়া যাক। 

যাই হোক ঝাকুনি খেতে খেতে এবার খাবার খাওয়ার সময় হয়ে গেলো,মানে সকালের নাস্তা,আসুন নাস্তা সেরে নেয়া যাক। আমি এখন আছি রাজবাড়িত । নাস্তা করা শেষ, খরচ হলো ৫৫ টাকা। হোটেলটা দেখতে খুব বেশি ভালো না কিন্তু নাস্তা অসাধারন। এবার আবার যাত্রা শুরু এই অফরোডে,সকালের কুয়াশা ঘেরা চারপাশ দেখে মনটা ভালো হয়ে গেলো । 

motorcycle-riding-tips-in-bangladesh


এগিয়ে যেতে থাকলাম কুষ্টিয়ার দিকে আর প্রতি মূহুর্তে মনে মনে ভাবতে লাগলাম এই রাস্তাগুলো দিয়ে যে বাইকার ভাইয়েরা প্রতিদিন চলাচল করে তাদের না জানি কি অবস্থা হয়। বাইকের গতি ২৫-৩০ একটু ভালো রাস্তা পেলেই ৫০-৫৫ কিন্তু এই গতি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। এভাবেই চলে আসলাম পাংসাতে। বেশ ভালোই রাইড হলো,রাস্তা খারাপ থাকলে সামান্য রাস্তাও অনেক মনে হয়,আর যদি একা থাকেন তাহলে তো কথাই নেই। 

যারা একা রাইডে বের হতে চান,আমার মনে হয় একা বের না হয়ে সাথে একজন পছন্দের পিলিয়ন নিয়ে বের হওয়ায় উত্তম। এতে অনেক উপকার হবে। এবার এক কাপ চা পান করা উচিৎ, সকালের নাস্তা সেরে চা পান করতে মনে নেই। আসেন চা খেয়ে নেয়া যাক।

চা খাওয়া শেষ এবার এগিয়ে যেতে হবে কারন হাতে সময় কম,আর কোথাও দাড়াবো না। রাইড করতে করতে চলে আসলাম কুষ্টিয়ার কুমারখালি তে,ভেবেছিলাম দাড়াবো না,কিন্তু জায়গাটা দেখে না দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না,বেশি দেরি করবো না, জাস্ট কয়েকটা ছবি তুলেই সামনে এগিয়ে যাবো। ছবি তোলা শেষ এবার যাওয়া যাক। কিছুটা পথ ভালো পেলাম তাও খুব ভালো না,এই সড়কটি ধরে চলে আসলাম কুষ্টিয়ার চোরহাস মোড়। এখান থেকে তুষার ভাই আমার সাথে যোগ দিবেন। ভাইকে নিয়ে এগিয়ে যাবো পাবনার দিকে।

  

highway-riding-in-bangladesh

 ঢাকা থেকে যারা প্রথম আসবেন কুষ্টিয়া তারা কিভাবে আসবেন সেটা আমি বলে দিচ্ছি। “ গাবতলী থেকে সাভার নবীনগর হয়ে চলে আসবেন মানিকগঞ্জ,মানিকগঞ্জ থেকে পাটুরিয়া ফেরীঘাটে এসে ফেরী পার হয়ে চলে আসবেন গোয়ালন্দ মোড় গোয়ালন্দ মোড় এসে ডানে ঘুরে ঢুকে যাবেন রাজবাড়ির পথে এই একি রাস্তা ধরে চলে আসবেন কুষ্টিয়া ।” কিন্তু রাস্তাটা ভালো না,তবে ভালো একটা রাস্তাও আছে গল্পটা পড়তে থাকুন বলবো। 

চলছে তুষার ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা….ভাই চলে আসলেন এবার আমরা একটা বাইপাস দিয়ে পাবনা যাবো। এবার তুষার ভাই পাবনার সড়কটি দেখিয়ে দিবেন। চলুন তাহলে….. চলে আসলাম কুষ্টিয়া বাইপাস রোডে যাচ্ছি পাবনার দিকে। এবার বাইক চালাচ্ছেন তুসার ভাই আর আমি ভিডিও করা নিয়ে ব্যস্ত।ফাকা আর দারুন রাস্তা হওয়াতে এক টানে চলে আসলাম লালনশাহ সেতুতে।

motorcycle-tour-tips-bikebd

হার্ডিং ব্রিজ দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। ব্রিজ পার হয়ে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে ঢুকে পরলাম পাবনার পথে। এখন গন্তব্য পাবনা মানসিক হাসপাতালের আশেপাশে। পাবনায় খুব কাছের বাইক প্রেমি এক ছোট ভাই আছেন বাদল ভাই, অনেকদিন তার এলাকায় আসতে বলেছেন কিন্তু আশা হয় নি আমার তাই আজ ঠিক করলাম ভাইকে সারপ্রাইজ দিবো। অনেকক্ষণ চা খাওয়া হয় না,আসেন চা খেয়ে নেয়া যাক,তারপর সামনে আগাবো ।

চা পান করা শেষ এইবার এই সড়কটি দিয়ে সোজা চলে যাবো… রাস্তার অবস্থা বেশ ভালো তাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে লিচুর বাগান দেখতে দেখতে চলে আসলাম পাবনা মানসিক হাসপাতালের মাঠে। এর পাশেই বাদল ভাইয়ের বাড়ি,এবার তার জন্য অপেক্ষা করার পালা। বাদল ভাই চলে আসলেন,আমাদের কে দেখে তার মুখের অবস্থাটা দেখার মতোন ছিলো, মূলত তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য এতো দূরে আসা। 

Beautiful Bangladesh

 

এই হাসপাতালের পাশেই নাকি একটা আশ্রম আছে, এবার সেখানে যাবো জায়গাটা নাকি বেশ সুন্দর। চলুন যাওয়া যাক আর জায়গাটা আপনাদের ও দেখানো যাক। এবার বাদল ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরে যাবো কুষ্টিয়াতে। যাবো সেই একি রাস্তা ধরে কুষ্টিয়া। আমরা পাবনা আসার জন্য কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কটি ব্যবহার করেছিলাম। লালনশাহ সেতু পার হয়ে কিছুটা পথ এগিয়ে যেতেই পুলিশ দাড়া করালো, আমি সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই দাঁড়িয়ে গেলাম।

বাইকের কাগজ দেখে বাইক কাত চিত করে ইঞ্জিন নম্বর চেসিস নম্বর সব মিলিয়ে দেখলো,বেশ হয়রানি মূলক মনে হচ্ছিল আমার কাছে। ঢাকা থেকে একটা ছোট্ট মামলা দিছিলো কাগজ পাইনি,তাই কেস স্লিপ ছিলো, পুলিশ কেস স্লিপ দেখে আমাকে বলে কেস স্লিপ এমন হয় নাকি?? আমি হতবাক!! অতঃপর আমার উত্তর আজব ব্যাপার আপনি পুলিশ হয়ে এটা জানেন না!!!! হুট করে মনে হয় বাইকের সামনে থাকা সরকারি স্টিকারটিতে তার চোখ পরলো, এবার কাগজগুলো হাতে দিয়ে বললেন যান আপনি!!!  

bike-tour-tips-bikebd

 যাই হোক কিছুটা এগিয়ে এসে হাতের বামদিকে থাকা একটা হাইওয়ে হোটেল থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। হোটেলটি দেখতে ভালো না,কিন্তু খাবার দারুন। মাটির চুলার রান্না আহ। দুজনের খাবার খেতে খরচ হয়েছিলো ৪০০ টাকা। এবার কুষ্টিয়ার পথে ছুটে চলা….. চলে আসলাম কুষ্টিয়া চৌড়হাস মোড়ে। তুষার ভাইকে নামিয়ে দিয়ে যাবো নানা বাড়ি সবার সাথে দেখা করে আবার যাত্রা শুরু করবো। দেখা করা শেষ, এবার কুষ্টিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পালা। 

ছুটে চলছি ঝিনাইদহ এর পথে,পড়ন্ত বিকেল তাই রাইড করতে দারুন লাগছিলো। সন্ধ্যার দিকে পৌছে গেলাম ঝিনাইদহ, প্রিন্স ভাইয়ের সাথে দেখা হলো আর শুরু হলো আড্ডা…… আড্ডা শেষ করতে করতে রাত হয়ে গেল। একা রাইডারের এবার ঘরে ফেরার পালা। ঝিনাইদহ মাগুরা সড়কটি ধরে এগিয়ে যাচ্ছি, বেশ ভালোই লাগছিলো আমার, হুট করে মনে হল সামনের দিকে কি যেনো দৌড় দিয়ে গেলো। ব্রেক করে দেখি কিছুই নাই, কিন্তু আমি তো দেখলাম মানুষ এর মতো, যাই হোক আমার মনের ভুল ছিলো এটা।

  

bike-tour-tips-bikebd

 হঠাৎ খেয়াল হলো, পিছে আর সামনে তাকিয়ে দেখি রাস্তাটা পুরা ফাকা আশেপাশে ও কিছুই নাই। এমন ঘটনা আমার নাইট রাইডে আরো কয়েকবার হয়েছে তাই ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে গেলাম। এমন কিছু হলে কেউ ভয় পেয়ে যাবেন না, এতে আপনি দূর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন। রাস্তা কেনো যেনো শেষ হচ্ছে না আজ। অবশেষে আসলাম মাগুরা,বাসস্টান্ড এ দাঁড়িয়ে এককাপ চা খেয়ে নিলাম, কিছুটা ফ্রেশ লাগলো। 

চায়ের মূল্য ১০ টাকা। এবার আমার চেনা মুখস্ত রাস্তা তাই একটু টান হবে। কোন রকম বিরতি না নিয়ে মাগুরা থেকে একটানে চলে আসলাম ফরিদপুর। রাত তখন ১০ টা। আর এভাবেই শেষ হলো আমার ঢাকা-ফরিদপুর-রাজবাড়ি-কুস্টিয়া-পাবনা-মাগুরা-ঝিনাইদাহ ভ্রমনের গল্প। দিনের আলোতে হাইওয়ে সড়ক আর রাতের আধারের হাইওয়ে সড়ক পুরা আলাদা,তাই একটু সাবধান থাকবেন। আজকের গল্প এখানেই শেষ। নিরাপদ হোক আপনার পথচলা।   লিখেছেনঃ আশিক মাহমুদ   

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। 

মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Honda SP160 (Single Disc)

Honda SP160 (Single Disc)

Price: 197000.00

Lifan Blues 150

Lifan Blues 150

Price: 0.00

Lifan KPV350

Lifan KPV350

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Freedom 125

Bajaj Freedom 125

Price: 0.00

Lifan K29

Lifan K29

Price: 0.00

455500

455500

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes