মোটরসাইকেল টায়ার – টিউবড ভার্স টিউবলেস টায়ার ফিচার

This page was last updated on 13-Jul-2024 10:04pm , By Ashik Mahmud Bangla

আধুনিক মোটরসাইকেল ও মোটরসাইকেল টেকনলোজি উন্নতির বেশ কিছু স্বণালী যুগ পার করে এসেছে। সাধারন টেকনলোজি আপগ্রেডের সাথে সাথে মোটরসাইকেল টেকনলোজিও অনেক অগ্রসর হয়ে গিয়েছে। আর সেইসাথে মোটরসাইকেলের টায়ারের প্রকৌশলেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। তো আজ সেইসূত্রে আমরা আলোচনায় নিয়ে এসেছি  মোটরসাইকেল টায়ার – টিউবড ভার্স টিউবলেস টায়ার ফিচার।

motorcycle  tyre

মোটরসাইকেল টায়ার টাইপ

মোটরসাইকেলের টায়ার চাকা তথা মোটরসাইকেলের এক অত্যন্ত গুরুতত্বপূর্ণ অংশ। এটা অনেকটা রাবারের জুতোর মতো, যা কিনা মোটরসাইকেলের রাইডিং, কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিংয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলে। আর এটা মোটরসাইকেলের পারফর্মেন্স ও সেফটি ইস্যুর সাথেও সরাসরি জড়িত। তাই টায়ার মোটরসাইকেলের একটি স্পর্শকাতর অংশ।

আধুনিক মোটরসাইকেলে টাইপ ও ক্যাটাগরিভেদে বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের টায়ার ব্যবহার করা হয়। আর চলাচলের রাস্তার ধরন ও ব্যবহারের ধরনভেদেও টায়ার আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়ে থাকে। তবে মোটাদাগে মোটরসাইকেলের টায়ার মূলত: দুই ধরনের হয়ে থাকে। আর তা হলো টিউবযুক্ত ও টিউব ছাড়া টিউবলেস টায়ার।

motorcycle tyre

মোটরসাইকেল টায়ার – টিউবড ভার্স টিউবলেস টায়ার

এখনকার আধুনিক মোটরসাইকেল গুলোতে বিভিন্ন ডিজাইনের টিউবলেস টায়ারই বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এটা মুলত: এর ভিন্নধর্মী ফিচার, পারফর্মেন্স, সেফটি-ইস্যু ও সহজ মেইনটেন্যান্সের সুবিধার কারনেই ব্যবহার করা হয়। তবে আগের টিউব টাইপ টায়ারও তার ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারনে বেশ বড় একটি বাজার দখল করে আছে।

Also Read: Maxxis M6233 (100/80-17) Tyre Price In Bangladesh

সুতরাং টিউবড ও টিউবলেস দুই ধরনের টায়ারই ভিন্ন ধরন ও বৈশিষ্ট্যের মোটরসাইকেলের জন্যে বাজারে সমানভাবেই বিদ্যমান। আর প্রত্যেক ধরনের টায়ারেরই রয়েছে আলাদা স্বকীয়তা, বৈশিষ্ট্য ও দোষ-গুন। তো দুধরনেরই টায়ারেরই সচরাচর সুবিধা-অসুবিধা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

টিউবড টায়ারের সুবিধা ও অসুবিধা

টিউব টাইপ টায়ার মূলত: বেশ আগের টেকনলোজি। তবে এসব টায়ারের কিছু মৌলিক গুনাগুন রয়েছে, আর সেইসাথে রয়েছে কিছু দোষও। তবে সবকিছুর ওপরে এই ধরনের টায়ার এখনো মূলত: বিশেষ কিছু কারনে ও সুবিধার জন্যে ব্যবহার করা হয়। আর ভিন্ন কিছু সুবিধার জন্যে এখানো এসব টায়ারের বাজার এখনও বেশ বড়।

টিউবড টায়ারের সুবিধা

  • টিউব টায়ারের গঠন অনেকটাই সহজ ও ম্যানুফ্যাকচারও তুলনামুলকভাবে সহজ। আর সেকারনেই এটা অনেকটাই সস্তা ও অল্প দামের বাইকের জন্যে বেশ সুবিধাজনক সমাধান।
  • টিউবড টায়ারের কম্পাউন্ড কিছুটা পাতলা হওয়ায় এটা অনেকটাই হালকা। সুতরাং ছোট ও কম ক্ষমতার মোটরসাইকেলের জন্যে এটি আদর্শ।
  • গতানুগতিক দৈনন্দিন চলাচলের জন্যে সাধারন মোটরসাইকেলের জন্যে এটা সাশ্রয়ী অপশন।
  • বাতাস ধারনের কাজটা ভেতরের টিউব করায় সহজেই বড় ডায়ামিটারের টিউব টায়ার তৈরী করা যায়। আর অল্প খরচের ষ্টিল স্পোক-রিম ব্যবহার হয় বলে এর সার্বিক খরচও কমে যায়।
  • টিউব টায়ার সহজে রিপেয়ার করা যায় এবং অনেকবার রিপেয়ার করার পরও ব্যবহার করা যায়।
  • টিউব টায়ারে খুব কম বাতাসের চাপ রাখা যায় বলে এতে ভিন্নমাত্রার গ্রিপ পাওয়া খুবই সহজ।
  • আর টিউব টায়ারের সার্বিক এ্যাসেম্বলীর কারনে এর শক সয়ে নেবার ক্ষমতাও অনেক বেশি।
  • আর অফরোড, মটোক্রস ও এ্যাডভেঞ্চার বাইকের জন্যে টিউব টায়ারই সর্বাধিক সুবিধা দেয়।

টিউবড টায়ারের অসুবিধা

  • টিউব টায়ারের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো এর সহজে পাংচার হয়ে যাওয়া। এটি টিউবলেস টায়ারের চেয়ে বেশি সহজে পাংচার হয়ে যেতে পারে ও সহজেই টায়ার বসে যায়।
  • এই টায়ার রিপেয়ার করতে এর পুরো সেটআপই খুলে ফেলতে হয়। এটা বেশ বিরক্তিকর।
  • খুব সহজে পাংচার হওয়া ও চাকা দ্রুত বসে যাবার কারনে এটি হাই-স্পিড স্ট্রিট-বাইকের জন্যে অনেকটাই রিস্কি।

টিউবলেস টায়ারের সুবিধা ও অসুবিধা

বর্তমান বাজারে আধুনিক মোটরসাইকেল গুলোতে টিউবলেস টায়ার বেশ কমন এক ফিচার। আর হাইটেক মোটরসাইকেল গুলোতে টিউবলেস টায়ারতো থাকবেই। আর এই টায়ারগুলোও বেশ আকর্ষনীয় ফিচারযুক্ত যা বাইকর পারফর্মেন্স লেভেল অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তবে সেইসাথে এসব টায়ারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। চলুন সেসব দেখে নেয়া যাক।

টিউবলেস টায়ারের সুবিধা

  • আধুনিক পারফর্মেন্স স্ট্রিট-বাইকের জন্যে টিউবলেস টায়ার খুবই ভালো এক সমাধান।
  • টিউবলেস টায়ারের সবচেয়ে বড় গুন হলো এটা সহজে পাংচার হয়না ও চাকা বসে যায় না। ফলে এটা সেফলি নিরবিচ্ছিন্ন সাপোর্ট দিতে পারে।
  • টিউবলেস টায়ারগুলি পিচ-রাস্তা ও সমান রাস্তায় খুবই ভালো পারফর্ম করে। আর এর পাওয়ার, স্পিড, এক্সিলারেশন ডেলিভারিও খুবই ভালো। আর সেইসাথে এটি ভালো ফুয়েল ইকনোমি দিতে সাহায্য করে।
  • এই ধরনের টায়ার অনেকটাই মেইনটেন্যান্স-ফ্রি, কেননা এর ভেতরে বাড়তি কোন টিউব থাকেনা।

Also Read: Motorcycle Tire - Tubed vs Tubeless Tire Advantage & Disadvantages

টিউবলেস টায়ারের অসুবিধা

  • টিউবলেস টায়ার অনেকটাই খরুচে ধরনের। এই টায়ারগুলো দামীতো বটেই, উপরোন্ত এর রিমগুলোও বেশ দামী।
  • এই ধরনের টায়ারগুলো টিউবড টায়ারের চেয়ে কম শক সয়ে নিতে পারে। আর এর অনমনীয় কাষ্ট রিমের কারনে এর শক সয়ে নেবার ক্ষমতা অনেক কম।
  • স্ট্রিট-বাইকে টিউবলেস টায়ার খুব ভালো কাজ করলেও অফরোড বা অন্য ধরনের বাইকে এর উপযোগীতা নেই বললেই চলে।
  • টিউবলেস টায়ারের মেইনটেন্যান্স তেমন সহজ নয়, আর তা বেশ খরচসাপেক্ষ।
  • আর টিউবলেস টায়ারে সামান্য রিপেয়ার বা মেরামতি হলেই তা বদলে ফেলতে হয়। যা টিউবড টায়ারে করতে হয় না।

তো বন্ধুরা মোটামুটি এই ছিল মোটরসাইকেল টায়ার তথা টিউবড ভার্স টিউবলেস টায়ার ফিচার এর আদ্যোপান্ত। মোটামুটি দুধরনের টায়ারেরই আলাদা কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই আপনার বাইকের ধরন ও ব্যবহার ক্ষেত্র বিবেচনা করে আপনার প্রায়োজনীয় ও উপযুক্ত টায়ারটি বেছে নিন। ধন্যবাদ।