Shares 2

লং ডিসট্যান্স মোটরসাইকেল ট্রাভেলার দের জন্য গুরুত্তপূর্ণ টিপস

Last updated on 21-Nov-2023 , By Shuvo Bangla

আসসালামুয়ালাইকুম!! বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও তার সাথে তাল মিলিয়ে আগাতে পারছে না আমাদের দেশে মোটর সাইকেল সিসি লিমিট, পার্টস এবং ভ্রমনের উপযোগী সরঞ্জামসমুহ। এই দেশে যেমন  একজন মোটরসাইকেল চালক পেশা হিসেবে মোটরসাইকেলকে বেছে নেবার মত কোন সুযোগ পায়নি, তেমনি এখানে কোন উইকেন্ড এ বাইকে বাইরে ঘুরতে যাবার মত মানষিকতাও সমাজে বিরল। আমরা আশা রাখি সারা বিশ্বের মত আমাদের দেশেও আধুনিক মোটরবাইক সহ আনুসাংগিক সরঞ্জামসমুহের বাজার ভালোভাবে তৈরি হবে এবং আমাদের সমাজে -পরিবারে বাইকেও যে খুব ভালোভাবে ট্রাভেল করা যায় সেই মানষিকতা আসবে। 

লং ডিসট্যান্স মোটরসাইকেল ট্রাভেলার দের জন্য গুরুত্তপূর্ণ টিপস

এসব সিমাবদ্ধতার মদ্ধেও আমরা যারা দূর দুরান্তে বাইকনিয়ে ভ্রমনে বের হই তারা সাধারনত নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকেই বের হই। নিজেদেরকে দুর-ভ্রমনের জন্য মানষিকভাবে প্রস্তুত করি। মোটরসাইকেল কে সর্বোচ্চ সতর্কতা দিয়ে রেডি করে নেই। রাইডার এবং বাইকের জন্য, আমাদের যাদের  পকেটে পয়সা বেশি তারা সাধারনত দেশের বাইরে থেকে প্রয়জনীয় সামগ্রি কিনি পাশাপাশি নিজেরাও কিছু প্রয়জনীয় সামগ্রি প্রস্তুত করে নেই। দুরদুরান্তে ভ্রমনে যারা অভিজ্ঞ নয় তাদের ভাবনায় অবশ্য মোটরবাইক, গ্লাভস, হেলমেট, জুতা ছাড়া কোনকিছু মোটরবাইক ভ্রমনে প্রয়জনীয় নয়। এজন্যে একজন বাইকার তার বাইক চালানোর বয়সের সাথে সে তার নিজের প্রয়োজন মত শর্ট বা লং ডিস্ট্যান্স ভ্রমনের মানষিকতা, দক্ষতা অর্জন করে। 

এই গদ্য লিখতে বসার উদ্দেশ্য, যারা যারা নতুন রাইড করছেন, আশা করেন ভালোভাবে বাইক চালাবেন, দূরে বা কাছে ভ্রমন করবেন, বাংলাদেশে বাইক ভ্রমনের টুলস সম্পর্কে ধারনা বারাবেন তাদের সামান্যতম হলেও যেন হেল্প হয়।

আমি লেখার শুরুতেই কিছু সিমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেছি, এবার কিছু সুবিধার কথাও বলি। দূর দুরান্তে বাইক নিয়ে ভ্রমনে গেলে আমাদের বাংলাদেশের সাধারন মানুষ অনেক হেল্প করে, বাইক প্রব্লেম হলে স্বল্প খরচে মেরামত করা যায়, খাদ্য পানীয় সহজে মেলে, বাসস্থান ও সহজেই মেলে, সহজে মিলবে গোসল করার জন্য পুকুর বা নদী , প্রাকিতিক কাজ সারার প্লেস, ছবি তুলে দেবার মানুষ আরো অনেক কিছু। এজন্য আমাদের দেশে কি নেই তা নিয়ে আমি একজন ‘বাংলাদেশী বাইক ট্রাভেলার’ হিসেবে কখনও ভাবি না। বরং যা আছে তার সাথে নিজের আইডিয়া যোগ করে দুর্দান্তভাবে নিজেকে গুছিয়ে ছুটে চলি পথে প্রান্তরে। অনেক বড় বড় বাইক ট্রাভেলার দের মত আমারও আছে বাইক নিয়ে মাঊন্ট এভারেস্টে ওঠার সাধ, কিন্তু কে বলেছে সব সাধই পুরন হতেই হবে? তবে যা পুরন করা পসিবল তা যাতে সঠিক ভাবে পুরন হয় সেদিকে লক্ষ্যটা রাখাটা আমার কাছে অত্যান্ত গুরুত্তপুর্ন। 

আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু টিপস শেয়ার করব, এর সাথে যোগ বা বিয়োগ হতে পারে আরো অনেক কিছুই। ওই যে বল্লাম, শুধুমাত্র কারো নিজের অভিজ্ঞতাই হলো তাকে বেস্ট এরেঞ্জমেন্ট করতে সাহায্য করে যে, ট্রাভেল টাইম এ কি তার প্রয়োজন আর কি প্রয়োজন নয়।

মোটরবাইক টিপস

প্রথমে মোটরবাইক, বাইকের সাথে ব্যাগ ও অন্যান্য যা প্রয়োজন তা রেডি করি-

(আমাদের দেশে অনেক বাইক রাইডার কে আমি দেখেছি কাধে একটা ব্যাগ, মাথায় হেলমেট পরে বাইক স্টার্ট করে ট্রাভেল এ বের হয়। এটা খারাপ আমি বলছি না, তবে একজন  ট্রাভেলার  সাধারনত পথ চলতে যা প্রয়োজন হয় তা সাথে নিতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আর সব কিছু মিলিয়ে গোছানো অবস্থা একজন ট্রাভেলারের পথেও ওনেক হেল্প করে, অনেক সময় বাচিয়ে দেয়।)   

১। ট্রাভেলের পুর্বে বাইক এর প্রধান ৩টি নাট চেক করা (সামনের চাকার নাট, পেছনের চাকার নাট এবং বাইকে চালকের পাদানির উপরের দিকে থাকা মাইন বডি নাট) যা খুবই জরুরি।

২। সামনের হাইড্রোলিক ব্রেক হলে তার তেল চেক এবং পেছনের ব্রেক যার যার নিজের স্বভাবজাতভাবে এডজাস্ট করে নেওয়া।

৩। ড্রাইভ চেইন এডজাস্ট আছে নি না চেক করে লুবিং করা। কিছুটা  ইউজড ইঞ্জিন অয়েল একটা ২৫০মিলি বোতলে ঢেলে মুখটা ভালোভাবে আটকে ব্যগ এ রাখা।

৪। ইলেক্ট্রনিক্স সাইড ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা চেক করা। 

৫। একটা প্লাগ, একটা করে ক্লাচ এবং পিকাপ তার সাথে নেওয়া।

৬। বাইকের ট্যুলকিট নেওয়া।

৭। আরো একটা মাল্টিপল ট্যুল কিট সাথে নেওয়া।

৮। তেল ফুল ট্যাংক করে নেওয়া। 

৯। সম্ভব হলে বাইকে হ্যান্ডগার্ড লাগিয়ে নিন। এটা আপনার হাতকে ধুলা- বালি, বাতাস, ঠান্ডা, কাদার হাত থেকে রক্ষা করবে। হ্যান্ডগার্ড থাকলে তা আগেই চেক করে নেওয়া যেন ট্রাভেল টাইমে লুজ হয়ে ডিসটার্ব না করে। হ্যান্ডগার্ড পাবেন বংশাল, পাবেন তরি পার্টস শপ (কছুখেত)

১০। একটি মোবাইল ফোন বসানোর স্ট্যান্ড (পাবেন রোডিস গিয়ার এ, বংশাল এ- দাম ১০০০-২০০০ এর মদ্ধে)এবং চার্জার (কার চার্জার দিয়ে বানিয়ে নেওয়া যায় দাম ৩০০টাকা, বাইরে থেকে আনালে ১৫০০-২০০০ টাকা পরবে) বাইক ট্রাভেলারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন, যদি সম্ভব হয় এগুলো হ্যান্ড্যলবার  এর সুবিধামত প্লেস এ লাগিয়ে নিন, চার্জার টা যেন অবশ্যই ওয়াটারপ্রুফ হয়। 

১১। আপনার বাইকে ডিফল্ট সিস্টেমে ঘড়ি না থাকলে ছোট একটা ওয়াটারপ্রুফ ঘড়ি বাজার থেকে কিনে (দাম ১৫০-৩০০টাকা) হ্যান্ড্যালবার এ লাগিয়ে রাখুন। পিছু লোকে কিছু বলে প্রবাদটার প্রাধান্য দিন, নিজের সুবিধা টা আগে দেখুন।

১২। হেড লাইট ছাড়াও বাইকে অতিরিক্ত ফগ লাইট টাইপের লাইট লাগান (পাবেন বংশাল, মিরপুর ১০, বাংলামোটর এ দাম পরবে ৩০০-৩০০০টাকা) এবং আলাদা সুইচ রাখুন (দাম ৩০-১৫০টাকা), না হলে ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।  

১৩। পানির বোতল রাখার জায়গা বানিয়ে নিন বাম্পারের সাথে (বোতল ক্যারিয়ার ১৫০-৩০০টাকা)এবং পানি ভরে নিয়ে বের হন আর পথে যেতেযেতে রিফিল করে নিন। 

১৪। লং জার্নিতে পা রাখার জন্য আলাদা আলাদা জায়গা তইরি করুন। আমরা চালকের পাদানি ছাড়াও সাধারনত পিলিওনের পাদানিতে পা রাখতে পারি, সামনে ঝুকে থাকতে হয় বলে সেটা বোরিং হতে পারে।  এক্ষেত্রে বাম্পারের দুই দিকে ফোল্ডেবল দুইটা পাদানি ঝালাই করে লাগিয়ে নিন (সব মিলে ২০০-৪০০টাকা)।  প্রয়োজনে আনফোল্ড করে সামনে আরাম করে পা রাখা যাবে যানবাহন বিহীন রাস্তায়। 

১৫। বাম্পারের সাথে ক্যামেরা মাউন্ট করে নিতে পারেন, ভিডিও ধারনের জন্য। (মাউন্ট কেনা এবং লাগানো সহ ৩০০টাকার মদ্ধে হয়ে যাবে) 

১৬। ফুয়েল ট্যাংক এর উপরে প্লাসটিক কাভার না থাকলে একটা ট্যাংকব্যাগ ট্যুর টাইমে অনেক কাজে দেয়। (দাম ১৫০০-৩০০০ এর মদ্ধে, পাবেন তরি শপ @ কচুখেত বা বংশাল এ) 

১৭। ওয়েস্ট বেল্ট ব্যাগ (পিউর লেদারের পাবেন ইস্টার্ন প্লাজাতে দাম ৫০০টাকা) ছাড়া অন্য কোন টাইপের ব্যাগ শরিরের সাথে লাগিয়ে ট্যুর এ বেরোনো আমি সাজেস্ট করিনা। এতে রিল্যাক্স থাকা যায়না এবং ব্যাল্যান্সিং এও প্রব্লেম হয়। 

১৮। বাকি জিনিসপত্র ক্যারি করার জন্য কস্ট হলেও একটা স্যাডল ব্যাগ সংগ্রহ করুন এবং পেছনের সিটের দুপাশে এডজাস্ট করুন। (পাবেন তরি শপ, কচুখেত এ বা বাইরে থেকে আনাতে পারেন। ৩০০০-৪০০০ টাকার মধ্যে বানাতে চাইলে ব্যাগ বানানোর দোকানগুলোতে ব্যাগ এর ছবি বা স্যাম্পুল নিয়ে যান, তারা তৈরি করে দিবে। আর ডাস্ট কাভার ও বানিয়ে নিন।  

১৯। মনে রাখতে হবে বাইকে লাগানো কোন জিনিস যেন নড়াচড়া না করে। তাহলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়বে, তাই যা যেখানে ফিক্স করছেন তা ভালোভাবে ফিক্স করতে হবে। 

২০। বাইক মোছার একটুকরা কাপড় বাইকে থাকতে হবে। ট্রাভেল টাইমে যখন ব্রেক দিবেন তখনই কাপড় টা দিয়ে বাইকের ট্যাংক এর এপার ওপাশ একটু মুছে নিন। বাইক্টা ফ্রেশ দেখাবে, নিজের কাছেও ভালো লাগবে।  

২১। ২ ঘন্টা পরপর বাইক থেকে নেমে হাত মুখ ধুয়ে নিতে পারলে অনেক ফ্রেশ লাগে। আর যদি পরিস্কার কাপর দিয়ে মুখটা ধোয়ার পর মুছে ফেলা যায় তাহলে তো দারুন লাগে। এজন্য বের হবার আগে একটা গামছা নিন এবং সেটা পেছনের ব্যাগ এর উপরের দিকে রাখুন যাতে সহজেই পাওয়া যায়।

২২। আপনার বাইকের চাকার বাতাসের চাপ কমিয়ে লং ডিস্ট্যান্সে বের হন। এটা খুব ভালো ব্রেক করতে হেল্প করবে। অনেকের মনে হবে বাইক ভাগবে কম তেল খাবে বেশি, কিন্তু জীবন রক্ষা আগে নাকি ওইগুলা আগে। অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত টা আপনার।

২৩। বাইকে যা যা প্রয়োজনিয় তা লাগানোর সময় বাইকে বসে খেয়াল রাখতে হবে যেন বাইকের ওয়েট ডানে বামে কম বেশী না হয়। 

২৪। বাইকের ব্যাগের মদ্ধ্যে এক্সট্রা এক্টা নরম কাপড়ের বড় ব্যাগ ভাজ করে রাখুন, ধরুন কোথাও আপনি ফুড ব্রেক দিলেন বা যে কোন লং ব্রেক দিলেন, তখন আপনার গ্লাভস, জুতা, জ্যাকেট, লেগগার্ডস এগুলো যেখানে সেখানে না রেখে ব্যাগে রাখুন, তাহলে সব গোছানো থাকবে। হাতের কাছে রাখা যাবে সব একসাথে। 

২৫। অবশ্যই বাইকের চাকায় পাংচার নিরোধক জেল দিয়ে দিন এবং সঠিক মাপে হাওয়া দিন। এতে চাকায় কোনপ্রকার লিক হলেও অনেক দুর্ভোগের হাত থেকে বেচে যাবেন।

লং ডিসট্যান্স মোটরসাইকেল ট্রাভেলার দের জন্য গুরুত্তপূর্ণ টিপস

এবার বাইক ট্রাভেল এর জন্য নিজেকে রেডি করি –

কি পড়ে বের হব? 

এই ভাবনার আগে আমরা আমাদের দেশের ওয়েদারকে আগে প্রধান ২ ভাগে ভাগ করে নেইঃ

১। শীতকাল

২। গরমকাল

শীতকালে ট্যুরে বের হবার আগে আমাদেরকে একটু বেশি বাতাস নিরোধোক কাপড়ের দিকে মনযোগী হতে হবে যেমনঃ

১। চামড়ার জুতা পড়তে হবে লং মোটা কাপড়ের মোজা দিয়ে।

২। সবসময় স্ট্রীচ কাপড়ের প্যান্ট পড়ুন, এটা আরামদায়ক। এর উপরে রেইনকোর্ট এর প্যান্ট পড়ে নিন। হয়ে গেল কোমড় থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত উইন্ডপ্রুফ, বাকি থাকলো শরিরের উপরের অংশ। 

৩। একটা ফুল হাতা গোলগলা গেঞ্জি সবার আগে পড়ুন, এরপর হাতাকাটা সোয়েটার পড়ে নিন, এর উপর পিউর লেদারের জ্যাকেট পড়ুন। প্রচন্ড শীত বাতাসের মদ্ধে আপনি যাই পরে বাইক চালান না কেন উলের সোয়েটার টা আপনার বুকে ভালো উষ্ণতা দিবে। ( দিনের তাপমাত্রা বাড়লে জ্যাকেট খুলে সোয়েটার টা ভাজ করে ব্যাগ এ রেখেদিন এতে আরাম পাবেন)।

৪। হাতের জন্য পাতলা উলের হাতমোজা পড়ে এরপর গ্লাভস পড়ুন। আরাম পাবেন। হাত এ ঠান্ডা লাগলে কিন্তু বেশিক্ষন বাইক চালাতে পারবেন না। 

৫। উলের একটা মাফলার কিনুন, একটু পাতলা- নরম এবং লম্বা দেখে কিনুন। এটা কান গলা নাক মুখ পেচিয়ে বেধে সাইডের দুই অংশ বুকের মাঝ বরাবর সোয়েটারের নিচে ঢুকিয়ে দিন। 

৬। এবার নিশিন্তে হেলমেট পড়ে বাইক স্টার্ট করতে পারেন। তবে দিনটা শুরু করবেন সকাল ৬টা থেকে আর শেষ করবেন সন্ধ্যা ৬ টার মদ্ধে।

(যদি আপনার আর্মর সেফটি জ্যাকেট থাকে তাহলে এটার নিচে উইন্ডব্রেকার পড়তে হবে, সেক্ষেত্রে লেদার জ্যাকেট প্রয়োজন নেই। এছাড়াও কানে শব্দনিরোধক এয়ারপ্লাগ ব্যাবহার করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।) 

এবার আসা যাক গরম কালের পোশাক নির্বাচন নিয়েঃ  

(গরমে ঘামে ভেজা এবং বৃষ্টির বিষয় মাথায় রেখে পোষাক নির্বাচনে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এবং পথে যেতে যেতে কিভাবে কম্ফর্টনেস বাড়ানো যায় সেটাও লক্ষ্য করা উচিত।)

১।জুতা এবং জুতার কাভারঃ যেকোনো ওয়েদারে শক্ত রাবারের সোলের জুতা, যার নিচে ভালো গ্রিপ আছে, এবং উপরের দিকেও অনেকটা হাই এমন জুতা পড়তে হবে। ভেতরে মোজা পড়তে হবে খুব পাতলা দেখে। (পাবেন ১৫০০-৫০০০ এর মদ্ধে, বাইরে থেকে ও শক্ত বুট আনিয়ে নিতে পারেন)।  জুতার ডাস্ট কাভার ব্যাগে রেখে দিন (পাবেন মোস্তফা মার্ট এ দাম ৬০০টাকা)। বৃষ্টি আসলে পরে নিবেন। এটা অবশ্য শীতের দিনেও কাজে লাগাতে পারেন।

২। প্যান্টঃ অনেকে বাইক ট্রাভেল টাইমে প্যান্ট পরেন তার অন্যতম কারন হলো পকেটে কিছু রাখা যাবে (যেমনঃ ফোন, চাবি, সিগারেট প্যাকেট, লাইটার, হেডফোন)। এমনটা ভাবার প্রয়জন আর নেই কারন এখন আপনি ট্রাভেলার। এগুলো সব রাখুন কোমড়ের বেল্ট ব্যাগ এ, আর ফোন রাখুন হান্ডলবার এ।

সো পকেট সহ যেকোন প্যান্ট ই আপনি পড়তে পারেন। আমার সাজেশন হলো পড়ুন স্ট্রিচ কাপড়ের প্যান্ট বা ট্রাউজার। এটা আপনাকে গরমে আরাম দিবে। আর বৃষ্টি আসলে রেইন কোর্ট পরে নিন। 

৩। শরিরের উপরে সবসময় নরম গেঞ্জি পড়ুন। গরম কালে পড়ুন হাফ হাতা গোলগলা গেঞ্জি। এর উপর পরতে হবে হাতাকাটা উইন্ডব্রেকার (কম দামে পাবেন হকার্স মার্কেট গুলোতে, দাম ৫০০-১০০০টাকা) সাথে দুই হাতে ডাস্ট/সান গার্ড (পাবেন যেকোন স্পোর্স শপ এ দাম ২০০-৪০০টাকা )। যদি আপনি এসব ঝামেলা মনে করেন তাহলে কিনে ফেলুন ফুল হাতা পাতলা উইন্ড ব্রেকার। আর যারা সেফটি জ্যাকেট পড়তে অভ্যস্ত তারা সেটা পরে নিন। বৃষ্টি নামলে জ্যাকেট প্যাক করে ব্যাগ এ রেখে দিন এবং রেইনকোর্ট পড়ুন।  

৪। মনে রাখবেন আপনি শীতে বা গরমে যখনই বাইক নিয়ে ট্রাভেল এ বের হন না কেন, কোন অবস্থাতেই যেন গলা এবং বুক ও নাক এ ডিরেক্ট বাতাস না লাগে এতে আপনার বিরক্ত বারবে এবং অসুস্থ হবার সম্ভাবনা বাড়বে। এজন্য আপনি একটা বড় রুমাল নাক মুখ বেধে বুকের দিকে নামিয়ে দিতে পারেন, কিন্তু এরকম পারফেক্ট সাইজের রুমাল মার্কেট এ কিনতে পাবেন না। আমি সাজেস্ট করি বাজার থেকে ভালো মানের গেঞ্জি কাপড় গজ কিনে আনুন, এবং সাইজ মত কেটে নিন।  

বাইক টিপস

৫। গ্লাভস পছন্দ মতো ব্যাবহার করতে পারেন, ওয়াটা্র প্রুফ গ্লাভস পাবেন নিউমার্কেট এ। যদিও এর কোয়ালিটি নিয়ে যথেস্ট সন্দেহ আছে। 

৬। ফুল মাস্ক হেলমেট দেখে শুনে কিনতে হবে।

(হয়ত ভাবছেন এত কিছু রাখবো কই। আমি অবশ্য আমার বাসায় একটা আলাদা সেলফ কিনে এনেছি সব কিছু গুছিয়ে রাখার জন্য। যেমন বাইক ট্রিপ ঠিক তেমনভেবে যেন আমি রেডি হতে পারি। আর কোন কিছু একদিনে হয় না। সব কিছু আস্তে আস্তে সংগ্রহ করতে হয়, সংগ্রহ হয়েও যায় যদি কেও মনে প্রানে বাইকার হয়।)

খাবারঃ বাইকে লং ট্রাভেলে বেরোনোর পথে শুকনা খাবার নিন, যেমনঃ  

১। চকলেট বার/ ক্যান্ডি 

২। দেশী বাদাম দিয়ে বানানো বার

৩। পানি

৪। সাথে সম্ভব হলে নিন বাসায় বানানো লেবুর সরবত

৫। বিস্কিট/কেক

৬। আপেল/ পেয়ারা বা অন্যান্য ফল সাথে রাখুন অবশ্যই

৭। শশা 

(বাইক ট্রাভেল টাইমে কখন কি খাবেন তা আপনার নিজ্বস্ব খাদ্যাভ্বাসের উপরে নির্ভর করে। যখন খেতে ইচ্ছে হবে তখন ই কিছু খেয়ে নিন। শরীর স্বাভাবিক রাখতে শক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। দিনে খুব বেশী খাবার না খাওয়াই ভালো। তবে রাত্রে অবশ্যই পর্যাপ্ত খাবার খেতে হবে এবং রাত ১০ টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে হবে, আর অনেকে ট্রাভেল টাইমে প্রচুর পানি খান, যা প্রয়জন তার বেশী অতিরিক্ত পানি ট্রাভেল টাইমে না খাওয়া ই ভালো)

মোটর সাইকেল টুলস

অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মধ্যে সাথে নিতে হবেঃ

১। ১ টা ম্যাচ/ লাইটার

২। ছোট একটা টর্চ

৩। ব্লুটুথ হেডফোন (বিশেষ করে অল্প দামের মধ্যে এল জি এর এইচ বি এস টোন টা বেশ ভালো )। এক্সট্রা একটা বাসিক হেডফোন ব্যাগ এ রাখুন ব্যাকাপ হিসেবে।

৪। ছবি তোলার ক্ষেত্রে ভালো মানের একটি ক্যামেরা আপনার সংগ্রহে রাখুন, চার্জার নিতে ভুলবেন না। (পথে প্রত্যেক্টা ব্রেকেই ছবি তুলুন।)

৫। কামেরার ট্রাইপড, মনোপড বা সেলফি স্টিক ব্যাগে প্যাক করুন।

৬। বাইকের লকার গুলা ভালভাবে নিয়ে নিন। 

৭। টুথব্রাশ ও পেস্ট নিন। 

৮। একটা থ্রিপিন প্লাগ রাখুন, এটা অত্যান্ত প্রয়োজনীয়। 

৯। মোবাইল ফোন, জিপিএস বা অন্যান্য প্রয়জনীয় দ্রব্যাদি।

৯। ১-২ গজ শক্ত দরি ব্যাগে নিয়ে নিন। পথের মাঝে কোথাও নোউকা পারাপারের সময় এটা দিয়ে বাইক বেধে রাখুন। আর ছোট নৌকা হলে, নদীতে চলার সময় বাইকের উপরেই ব্যালেন্স করে বসে থাকুন।  

ফার্স্ট এইডঃ ট্যুর কালীন সময়ে ব্যাগ এ রাখুন স্যাভলন ক্রিম, ব্যান্ডেজ গজ, পেইনকিলার এবং অন্যান্য জরুরি মেডিসিন।

সতর্কতাঃ যে এলাকা কাভার করতে যাচ্ছেন, সেই এলাকার ডিটেইল যাবার আগেই ভালোভাবে দেখে শুনে বুঝে যান। কোথায় যাচ্ছেন, সেই এলাকা বা ফারীর পুলিশ রুম এর ফোন নাম্বার সংগ্রহ করুন এবং যাবার পুর্বে ওই অঞ্চলের র‍্যাব কার্যালয়ে আপনার নাম, ফোন নাম্বার, কতদিন থাকবেন তা জানান এবং জরুরী হেল্প নাম্বারটা চেয়ে নিন। লং টাইম স্টে করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নাম্বার সংগ্রহে রাখুন। আভ্যন্তরীন পথের নির্দেশনা পেতে সংস্লিস্ট এলাকার সি এন  জি, রিক্সা, ব্যাটারি অটো এদের সহায়তা নিন, বড় পথের নির্দেশনার জন্য, বাস বা ট্রাক ড্রাইভারের সাহায্য নিন। কোন নিদ্রিস্ট বাড়ি বা হোটেল বা কেনাকাটার মার্কেট খোজার ক্ষেত্রে  ওই এলাকার কোন মোটরসাইকেল চালোকের সাহায্য নিন, সাধারনত একটা লোকাল এলাকায় আপনি যদি একজন ভালো মানুষের  (যিনি অন্য একটি বাইক চালাচ্ছেন) সাথে কথা বলেন, তাহলে তিনিয় আপনাকে সবচেয়ে ভালোভাবে গাইডলাইন দিতে পারবে। কেও যদি বলে আমার সাথে চলেন/ আমাকে আপনার পেছনে বসান আমি নিয়ে যাচ্ছি, তাহলে তাকে এভোয়েট করুন।

(মানুষের প্রয়োজনের কোন শেষ নেই। বাইক ট্রাভেলারদের বিভিন্ন টুলস এর প্রয়োজন আরো বেশি। এরই মধ্যে এদেশে অনেকেই কিনেছেন ভালো ভিডিও ধারনের জন্য গোপরো একশান ক্যামেরা, রেসিং বডি কিট, কমুনিকেটর, জিপিএস ইত্যাদি আধুনিক সরঞ্জাম।)

আর্টিকেল টা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ঝামেলামুক্ত মোটরবাইক লং ট্রাভেলারের জন্য, যা আমার ১০ বছরের বাইক চালানো পর্যালোচনা করে নিজস্ব দর্শনে লিখা হয়েছে। এখানে থাকতে পারে অনেক লিমিটেশন/ বাড়াবাড়ি। কোন শর্ট ডিস্ট্যান্স ট্রাভেলার/ স্ট্যান্ট বাইকারদের জন্য এই আর্টিকেল টা বিষাদময় হতে পারে। পোস্টের নিচে কমেন্টসে আপনার মতামত/ দর্শন লিখে আমাকে হেল্প করলে খুশি হব। কষ্ট করে পড়বার জন্য ধন্যবাদ।  

হোপ ফর দ্যা সেইফ বাইক ট্রাভেলিং ইন বাংলাদেশ।

লেখক ঃ Taimur Hasan

Published by Shuvo Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Aprilia Tuareg 660

Aprilia Tuareg 660

Price: 0.00

Aprilia Tuono 660

Aprilia Tuono 660

Price: 0.00

Aprilia Tuono V4

Aprilia Tuono V4

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS400Z

Bajaj Pulsar NS400Z

Price: 460000.00

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes