কক্সবাজার ট্যুর টিম সাওয়ারি - পঞ্চম পর্ব

This page was last updated on 11-Dec-2022 01:03pm , By Saleh Bangla

জেটিতে যাওয়ার রাস্তাটাও দারুন।  মূল রাস্তা থেকে আপনাকে একটু ঢাল বেয়ে নামতে হবে এর পর ট্যুরিজম কোম্পানির অফিস আর বেশ কিছু ট্যুরিস্ট বাস দাঁড়ানো দেখলাম। আমরাও সেখানেই বাইক রেখে সরু পুরানো তক্তার ব্রীজ দিয়ে হেটে ঘাটে পৌছলাম।  বাহ,  কি চমৎকার দৃশ্য  স্বচ্ছ পানির নাফ নদী। যা বয়ে চলেছে সোজা সাগরের দিকে। জেটির দু'পাশের দৃশ্যও চমৎকার  অনেক গাছপালা দুইপাশে, আর দেখে মনে হচ্ছিলো আমি যেনো সুন্দরবনের কোনো ক্ষুদ্রাংশে দাঁড়িয়ে আছি।  গাছগুলোর বৈশিষ্ট্য তেমন -ই  নদীর পাড়ের শীতল ঝিরঝিরে বাতাস উপভোগ করতে করতে গল্প গুজবে দু'জনে অনেক্ষন কাটিয়ে দিয়ে কক্সবাজার এর ফিরতি পথ ধরলাম।

কক্সবাজার ট্যুর টিম সাওয়ারি - পঞ্চম পর্ব কক্সবাজার

এবার আমাদের কথা হলো যে কক্সবাজার ফেরার পথে সব কটা স্পটে সময় দেবো। আমরা এক টানে মেরিন ড্রাইভে উঠলাম। এর পর যেখানেই পাহাড় আর সমুদ্র একেবারে কাছাকাছি সেখানে কিছু সময়ের জন্য থেমে ছবি তোলা আর প্রকৃতি উপভোগ চলতে থাকল। আমরা শাপলাপুর বীচে বিরতি নিলাম। রাতের বেলা তাবু খাটিয়ে থাকার জন্য এক আদর্শ জায়গা।  প্রায়-ই ফেসবুকে দেখি অনেক বাইকার ভাইরা এখানে রাতের বেলা তাবু টানিয়ে থাকেন। মনে মনে এখানে কোনো এক ভরা পূর্ণিমারাত উপভোগ করার সংকল্প করে ফেললাম। তবে এবার আর হচ্ছেনা।  এখানে নীল পানির এক কৃত্রিম খাল দেখেছি। সত্যি-ই অসাধারণ লেগেছে।  এর পর আমরা এক টানে ইনানী বীচ। সেখানে কিছু সময় ঘোরাঘুরি করে এক টানে হিমছড়ি।


হিমছড়ি অনেক বছর আগে একবার এসেছিলাম যার সৌন্দর্য দেখে আমি যারপরনাই মুগ্ধ হয়েছিলাম কিন্তু এখন কেমন জানি কৃত্রিম কৃত্রিম লাগলো। আর হিমছড়ির পার্কিং সুবিধা আমার মন:পুত হয়নি। নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব। যাই হোক,এবার আমরা এক টানে দুপুর ২ টার দিকে হোটেলে ফিরে আসলাম। এসে দেখি আমাদের বাকী সদস্যদের কেউ-ই রুমে নেই, সবাই বীচে।  আমরাও হালকা জামা কাপড় পড়ে বীচের দিকে দিলাম ছুট। এখনো তো মন মত ঝাপঝাপি-ই করা হলোনা। বীচে যেয়েই ওদেরকে পেয়ে গেলাম। কক্সবাজার টেকনাফশুরু হলো ছেলেবেলায় ফিরে যাওয়া। ঝাপাঝাপি,পানিতে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা, একে অপরকে পানিতে চুবানো সমানতালে চলতে থাকলো।  আমরা একটা ফুটবল নিয়ে গিয়েছিলাম তাই কিছু সময়ের জন্য নিজেদেরকে রোনালদো - মেসি হিসেবে প্রমানের চেষ্টা চলল। এভাবেই কিভাবে যে প্রায় চার ঘন্টা কেটে গেলো টের-ই পেলাম না। বেলা শেষ হয়ে সূর্য তখন রক্তিম আকার ধারন করেছে। আমরাও সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করলাম। সূর্য তার দিনের অধ্যায় চুকিয়ে বিদায় নিলো আর আমরাও এক দীর্ঘ উপভোগ্য সময় কাটিয়ে হোটেলের পথ ধরলাম। নিজেদেরকে অনেক হালকা মনে হচ্ছিলো। শেষ কবে এমন আনন্দ করেছিলাম তা স্মৃতির পাতা হাতরেও খুজে পেলাম না। শহুরে গৎবাঁধা জীবনে চলতে চলতে সবাই যেনো কেমন যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছিলাম তাই আমাদের জন্য এমন একটা সময় কাটানো আবশ্যক ছিলো।

আমার আর ইমরানের অতি জরুরী কাজ থাকায় পরের দিন খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কথা ছিলো। এদিকে খালিদেরও হটাৎ ভার্সিটিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ পড়ে যায় তাই আমরা তিনজন রাইডার আর একজন পিলিয়ন সহ মোট চারজন পরের দিন কক্সবাজার থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এদিকে আকাশ, মেহেদী আর হাসিব ভাই আরো দুই একদিন থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। সারাদিনের ব্যস্ততায় কেউ -ই আর সকালের পর কিছু খাইনি। তাই আমি, খালিদ, ইমরান আর আতিক সন্ধার পর বের হই দুপুর আর রাতের খাবার এক সাথে খেতে। খালিদ আর আতিকের পেটের অবস্থা ভালো না তাই ওরা খুব-ই হালকা পাতলা খেলো। কিন্তু আমি আর ইমরান চিকেন বিরিয়ানির অর্ডার দিলাম। আসলেই অস্থির ছিলো বিরিয়ানি। মনে হচ্ছিলো ফ্রাইড রাইস খাচ্ছি।  আপনারা সুগন্ধা বীচের কাছে হোটেল এলবেট্রসের পেছনের ঢাকা রেস্তোরার চিকেন বিরিয়ানির স্বাদ নিতে পারেন। অবশ্যই ভালো লাগবে। কক্সবাজার খাবারএরপর আমরা সোজা স্থানীয় মার্কেটে চলে যাই।যে যার ইচ্ছামত বাজার করতে থাকি। বিভিন্ন পদের আচাড়, চাটনি, শুটকি সহ কিছুই বাদ পড়লোনা তালিকা থেকে। সব কিছু হোটেলে রেখে সোজা আবার বীচে। বীচের পাড়ে বসে সমানতালে চলল সমুদ্রবিলাস আর আড্ডাবাজী। গরম গরম কফির কাপে চুমুক আর অথৈ সমুদ্রের ঢেউয়ের তীব্র গর্জন উপভোগ সাথে চলছে কাছের ভাই-বন্ধুদের আড্ডাবাজী। একবার চিন্তা করুন তো কেমন উপভোগ্য ছিলো সময়টি। সময় কিভাবে যেনো ফুড়ুৎ করে শেষ হয়ে গেলো।

রাত ১১ টার দিকে হোটেলের দিকে রওনা করলাম। আরো কিছু সময় থাকার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু আমরা নিরুপায়। আমাদের জন্য যে আগামীকাল কক্সবাজার - খুলনা এক দীর্ঘ রাইড অপেক্ষা করছে। ফেরার পথে দেখলাম কাকড়া,অক্টোপাস সহ নানান পদের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই, বার-বি-কিউ হচ্ছে। আমরা তো সবাই কম বেশি ভোজনপটু। কক্সবাজারে এসে যদি এসব সামুদ্রিক প্রানির স্বাদ -ই না নিলাম তাহলে কিভাবে হয়? সবাই ঢুকে পড়লাম। আমি সহ সবাই কাকড়া, চিংড়ি বা এই জাতীয় মাছের অর্ডার করলাম। কিন্তু আমাদের মেহেদী অক্টোপাসের অর্ডার দিয়ে বসলো। অক্টোপাস! চিন্তা করতেই পেট গুলিয়ে আসলো। একে তো কেমন জানি অদ্ভুত আকৃতি এর উপর পিচ্ছিল শরীর আর তাছাড়া এই অক্টোপাসের কত কাহিনী-ই তো শুনেছি ছোটবেলায়। ভাবছিলাম এই অখাদ্য পোলাটা খাবে ক্যাম্নে? যদিও মুখে কিছু বললাম না। 

যথাসময়ে খাবার এলো।সবাই যে যার মত খেয়ে নিলাম। এর পর অক্টোপাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। আমার খাওয়ার চেয়েও কেমন ভাবে খায় তাই দেখার প্রতি আগ্রহ বেশি। অনেক সময় পর ওয়েটার এসে বলে " মামা আর কিছু খাইবেন?" কেমন লাগে মেজাজটা! বললাম আমাদের অক্টোপাস কই? ওয়েটার বলল "খাইলেন তো এতক্ষন"! আমি বললাম,"খাইলাম মানে"!! পরে বুঝলাম কাকড়ার সাথে ছোটো গোল গোল করে কাটা যেই ফ্রাই গুলো মেহেদীর পাতে ছিলো ওটাই অক্টোপাস।  না বুঝে আমিও দুই-চার টুকড়া খেয়ে ফেলেছি। ইয়াক!  একটু আগে মনে মনে বিষাদগার করলাম এত আর সেই আমি-ই কিনা....!!!! যাক, মুখে কিছু বলিনি বলে ভালোই করেছি নয়তো সবার কাছে পচানি খেতে হতো। খাওয়ার পর্ব শেষে এবার আমরা রুমে ফিরে আসলাম। আজ অল্প সময় আড্ডা দিয়ে সবাই ঘুমাতে চলে গেলাম।কাল আমাদের চার জনের জন্য যে অনেক বড় একটা রাইড অপেক্ষা করছে...!!!(চলবে)

 

লিখেছেনঃ মঞ্জুরুল আল হাসান মুন্না

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Kinetic Luna 50

Kinetic Luna 50

Price: 0.00

Yezdi Roadking 250

Yezdi Roadking 250

Price: 0.00

Bajaj Vespa 150

Bajaj Vespa 150

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

View all Upcoming Bikes