TVS Apache RTR 160 4V ২১০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ -কাঞ্চন

This page was last updated on 21-Nov-2023 11:48am , By Shuvo Bangla

আমার নাম কাঞ্চন সাহা , আমি এখন বলব আমি কিভাবে বাইক চালানো শিখলাম এবং কিভাবে TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি কিনলাম । আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ি তখন বাইক চালানো শিখেছি । আমার মামার বাইক RX100 দিয়ে । আমি ২য় শ্রেনী থেকে সাইকেল চালাই। আর বাইক এর প্রতি আকর্ষণ আমার তখন থেকেই।

TVS Apache RTR 160 4V

TVS Apache RTR 160 4V ২১০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ -কাঞ্চন

আমার বড় ভাইয়ের একটা ডিসকভার ১৩৫ বাইক ছিল পরবর্তীতে আমার ভাই Fzs V2 বাইকটি কিনে ওগুলোই চালাতাম । পরবর্তীতে আমার পার্সোনাল বাইক লাগবে বাসায় বলাতে বাসা থেকে ২ লাখ টাকা দেয়। আমি তখন টাকা নিয়ে সুজুকি শোরুম এ যাই Gixxer SF বাইক নেওয়ার জন্যে কিন্তু বাইক না থাকায় প্রিবুক করি কিন্ত তারা আমাকে বাইক দিতে ব্যার্থ হন।

১৫ দিন অপেক্ষার পর প্রি বুক এর টাকা ফেরত নিয়ে আমি চলে যাই টিভিএস শোরুম এ । অনেকগুলো বাইক ছিল একটা কাল বাইক দেখে আমি বললাম একটা টেস্ট ড্রাইভের জন্য। ওটা ছিল আমার প্রথম RTR 4V রাইড।

আমার বাইক রাইড করতে অনেক ভালো লাগে আর আমি যখন হাইওয়েতে বাইক চালাই তখন আমি নিজেকে নিয়ে প্রাউড ফিল করি। আর কোথাও যাওয়ার হলে বাইক নিয়ে যেতে সাছন্দ বোধ করি।

বাইক ট্যুর এর জন্য আমার বাইক এতো ভালো লাগে । বাইক কেনার পর আমি ৩ বার কুয়াকাটা ২০০ কিলোমিটার রাইড করে গিয়েছি।এছাড়া সাজেক ১ বার, বান্দরবন ২ বার, থানচি, ডিম পাহাড় , আলিকদম , কক্সবাজার ২ বার গিয়েছি । ট্যুর করার জন্য আমর বাইক খুব ভালো লাগে।

আমি এক বছরের কিছু বেশি সময় ধরে বাইকটা ব্যবহার করছি । আমি তুলনামূলক  বাইক কম চালাই আর পাশাপাশি ট্যুর আর ঘুরাঘুরি করার জন্যে বাইক চালাই তাই মোটামুটি ২১০০০+ কিলোমিটার চালিয়েছি।

TVS Apache RTR 160 4V

TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু ভালো দিক -

পাওয়ারফুল ইঞ্জিন- আপনি সকল গিয়ারেই প্রায় সমানতালে পাওয়ার ও এক্সিলারেশন অনুভব করতে পারবেন।

লুকস - এটা যদিও ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন। তারপরও ১৫০+ ক্যাটাগরির প্রিমিয়াম বাইকগুলো বাদে এটার লুকস আমার কাছে ভাল লাগে।

মাইলেজ - আমি কখনও গড় মাইলেজ ৩৮ এর নীচে পাইনি। হাইওয়েতে লং ট্যুরে ৪৫+ মাইলেজ পাই ।

কমফোর্ট - যথেষ্ট কমফোর্টেবল। লং ট্যুরে ১৯০০+ কিলোমিটার ২ বার , ৪০০+ কিলোমিটার ৪ বার রাইড করেছি । এখন পর্যন্ত তেমন কোন ইস্যু ফিল করিনি । একবার ৩৫০+ কিলোমিটার পিলিয়ন সহ ছিলাম নিজেও পিলিয়ন হয়েছি ব্যাক পেইন , সিট শক্ত এসব হয় নি।

কন্ট্রোলিং- কন্ট্রোলিং অসাধারণ না হলেও অনেক ভালো। এটা আমার ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহৃত ১ম বাইক।

TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু খারাপ দিক -

টায়ার সাইজ ও টায়ার - এটার পাওয়ার হিসেবে টায়ার সাইজ হরনেট এর মতো ১০০ / ৮০ এবং ১৪০ / ৭০ দেয়া উচিৎ ছিল।

মাডগার্ড- সামনের মাডগার্ড টা সাইজে ছোট । ফলে কাঁদাপানি ছিটে প্রচুর । যা উপরের দিকে রেডিয়েটর (ওয়েল কুলিং অংশ) পর্যন্ত পৌঁছে।
পেছনের মাডগার্ডের এমন এক অংশে ফাঁকা কাদা পানি সরাসরি ছিটার পর উপরে বাড়ি খেয়ে ডিস্কের উপরে পরে । ফলে পেছনের ডিস্ক ঘনঘন পরিস্কার করা লাগে।

ওজন - ওজনটা হালকা পাতলা চালকের জন্য সমস্যা হতে পারে। বাইকটার ওজন ১৪০ কেজির মধ্যে রাখলে ভাল হতো।

সার্ভিস সেন্টার- সার্ভিস সেন্টারের কাজে আমার আস্থা কমে গেছে ওদের কিছু কাজে। রেকমেন্ডেশন এর চেয়ে হাওয়া বেশি দেয়া, চেইন টাইট বেশি দেয়া, হাওয়া দেয়ার পর ভাল্ব চেক না করায় বাসায় আসতে আসতে হাওয়া কমে যাওয়া । এই অভিজ্ঞতা গুলো হয়েছে তেজগাঁও সার্ভিস সেন্টারে। ওরা কাজ করার পর এখন নিজে আবার চেক করে নেই। আসলে সার্ভিসিং চলাকালে অফিসের কারনে নিজে উপস্থিত থাকতে পারিনা ।

টার্নিং রেডিয়াস -
টার্নিং রেডিয়াস কিছুটা বেশি । ইউটার্ন নিতে বেশি জায়গা লাগে। তবে, সিটি রাইডে জ্যামে খুব বেশি সমস্যা হয় না। তারপরও রেডিয়াস কমানো উচিৎ ছিল ।

আমি নিজে কিছু বিষয় মেনে চলি রাইডিং এর সময় -
কারো সাথে প্রতিযোগীতা নয়, নিজের প্রয়োজনে স্পিডিং, প্রয়োজনে ১০০ সিসিকে সাইড দেই, আবার গতি ৮০ - ১০০ ও করি। গতি দ্রুত উঠাতে ৩ ও ৪ নং গিয়ারে সর্বোচ্চ ৫০০০ RPM করি। নরমাল গিয়ার আপ করি ৩০০০ RPM এ । ইঞ্জিন অয়েল Shell Full synthetic 10w30 দেয়ার পর হতে মাইলেজ একটু বেড়েছে সাথে এক্সিলারেশনও। ধন্যবাদ ।

 

লিখেছেনঃ কাঞ্চন সাহা

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।