এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম(ABS) কি এবং এর উপকারিতা

This page was last updated on 11-Jan-2023 03:42pm , By Saleh Bangla

মোটরসাইকেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে ব্রেকিং। যারা মোটরসাইকেল রাইড করে থাকেন তারা এই বিষয়টি ভালভাবে অনুভব করেন। অনেক সময় হঠাত করে বাইক ব্রেক করতে হয়। আবার দেখা যায় যে পিচ্ছিল রাস্তায় বাইকের চাকা স্কিড করার সম্ভাবনা থাকে। তাই দুটি ব্রেকিং সিস্টেম এখন বাইকে ইনস্টল করা হচ্ছে যারা একটি হচ্ছে সিবিএস এবং অপরটি এবিএস। আজ আমারা ABS ব্রেকিং সিস্টেম সম্পর্কে জানব। motorcycle abs

Anti-lock Breaking(ABS) সিস্টেমের আমরা খুব মানুষই পরিচিত। অতিসাম্প্রতিককালে Aprilla ১২৫, KTM 125 এবং সর্বশেষ Honda CB ex-motion আমদানির বদৌলতে মানুষ কিছুটা জানতে পারছে ABS সম্পর্কে। ABS কী? ধরুণ, আপনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, হঠাৎ আপনার একেবারে সামনে কোন কুকুর এসে দাঁড়াল, আপনি তখন কী করবেন? অথবা মনে করেন, আপনি কোন গাড়িকে অতিক্রম করছেন, ঠিক সেই মূহূর্তে আপনাকে চাপ দিল, আপনি কী করবেন? কষে ব্রেক করবেন, তাই না। কিন্তু করলে কী হবে? চাকা পিছলে যাবে, আর আপনি ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যাবেন। রাস্তা যদি পিচ্ছিল অথবা বালুযুক্ত হয় তখন কী হবে? 

ব্রেক চাপার সাথে সাথেই নিয়ন্ত্রণ হারাবেন। আমাদের দেশের বেশীরভাগ দূর্ঘটনাই এমনটির জন্য হয়ে থাকে। আপনি যখন আঁতকে উঠেন, বা panicked হন, তখন আপনার সাধারণ সেন্স কাজ করবে না। এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সময়ে ক্লাচ চেপে গিয়ার কমিয়ে ক্লাচ ছেড়ে দিয়ে ইঞ্জিন ব্রেক প্রয়োগ করার মত সময় এবং জ্ঞান আপনার মাথায় আসবে না। চাকা স্কিড করলে ব্রেক ছেড়ে দিতে হয়, বাইক আবার নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু সহজে দুর্ঘটনা এড়ানো যায় না।  দিনশেষে ভাগ্যকে দুষবেন, (যদি বেঁচে থাকেন)।  ABS হচ্ছে সেই জিনিস যা চাকা আটকে যাওয়া বা লক হয়ে যাওয়াকে অ্যান্টিলক প্রযুক্তির মাধ্যমে রোধ করে।

 anti lock breaking system

 এবার খুব সংক্ষেপে ABS এর বিস্তারিত বলি। বাংলাদেশে ABS নতুন হলেও এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৯২৮ সালে প্রথম জার্মানরা ABS উদ্ভাবন করে। ১৯৫৮ সালে Royal Enfield মোটরবাইকে প্রথম ABS সংযোজিত হয়। আমাদের দেশের গাড়িগুলোতে ১৯৯৫-৯৭ সাল থেকে ABS ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানের প্রায় সব গাড়িতেই ABS আছে।  বাইকের ABS মূলত তিনটি অংশ দিয়ে তৈরি। প্রথমটা হল স্পিড সেন্সর, দ্বিতীয়টা হল ভাল্ভ, এরপর হল পাম্প। 

বাইকে যখন ব্রেক প্রয়োগ করা হয়, তখন স্পিড সেন্সর চাকার গতির হিসেব করে। যখন এটি দেখে চাকার গতি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাচ্ছে এবং লক হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায় যাচ্ছে, তখন এটি ভালভ আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়, যাতে কিনা ব্রেক ফ্লুয়িড অল্প পরিমাণে প্রধান ব্রেক সিলিন্ডারে প্রবেশ করে, অতিরিক্ত ব্রেক বল নিয়ন্ত্রণ করে। ব্রেক ফোর্স কমে আসলে ভালভ আবার খুলে যায়, আবার বেড়ে গেলে ভালভ আংশিক বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে হাইড্রোলিক ব্রেকবল এবং চাকার ঘূর্ণনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চাকা লক হয়ে যাওয়া, স্কিড করা নিয়ন্ত্রণ করে ABS। ব্রেক ছেড়ে দিলে ভালভ বন্ধ হয়ে যায়, তখন পাম্প পুনরায় চাপ ফিরিয়ে আনে হাইড্রোলিক ব্রেকিং সিস্টেমে।

 abs in bangladesh

 দুঃখজনক হলে সত্যি, আমাদের দেশের গাড়িগুলোতে ABS আসার সাথে সাথেই সরকারের উচিৎ ছিল বাইকে ABS বাধ্যতামূলক করা। কারণ গাড়ির থেকে বাইক বড্ড নাজুক। গাড়ির চারচাকা লক হয়ে গেলেও খুব সহজে পোল্টি খায় না। কিন্তু বাইক যেহেতু দুই চাকার উপর চলে, যেকোন এক চাকা লক হয়ে গেলে খুব সহজেই ভরবেগের কেন্দ্রের (center of gravity) সামঞ্জস্যতা হারায়। বিশেষ করে বাইকের পিছনে কেউ না থাকলে panic breaking  এর সময় পিছনের চাকা লক হয়ে যায়, বাইক হ্যাঁচকাভাবে মোচড় দেয়। এর কারণ ব্রেক ধরার সময় সামনের চেয়ে পিছনের চাকায় ঘর্ষণ (friction) কম কাজ করে। 

এটা হবেই, যত ভালো বাইকার হন না কেন। এবার একনজরে দেখে নেই, জীবন রক্ষাকারী এই ABS আর কী কী উপকারীতা আছে: ১। কষে ব্রেক করার ভিতরেও আপনি বাইকের হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে বস্তুকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারবেন। (avoiding the object)। ABS না থাকলে এই কাজ করতে গেলে বাইক থেকে ছিটকে যাবেন। ২। রাস্তা যেমনি হোক; বৃষ্টিভেজা, বালুযুক্ত, তৈলাক্ত, কাদামাখা কিংবা নুড়িপাথরময় আপনার ব্রেক আর স্কিড নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ৩। ইঞ্জিন ব্রেক দিয়ে ক্লাচ প্লেটের বারোটা বাজানো লাগবে না। ৪। বৃষ্টির দিনে পাহাড়ি রাস্তায় ABS খুব কার্যকারি। ৫। রাস্তার মোচড়গুলোতে বাইক কাত করে চালাতে হয়। এসময় শক্ত ব্রেক ধরা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ চাকা লক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী। ABS সেটা হতে দিবে না। ৬। লং ড্রাইভে আপনার মানসিক পরিশ্রম অর্ধেকে নেমে আসবে।

 motorcycle abs diagram


 আমাদের দেশে হাই সিসির বাইক আনার ব্যাপারে অনেকে বিশেষ করে সরকারের আপত্তি আছে। কিন্তু আমি মনে করি বেশী সিসির বাইক বেশী নিরাপদ, কারণ এগুলোর সেফটি ফিচার অনেক বেশী, অনেক টেকসই। আমরা সাধারণত যে বাইকগুলো চালাই, সেগুলো হল কম্যুটার অথবা স্পোর্টস কম্যুটার বাইক। এটি নিয়ে আমি অন্য একদিন লিখব। তবে আমার মনে হয় না, আমাদের দেশে ২৫০ সিসির বেশী বাইক আমদানি করার প্রয়োজন আছে। 

আমার মনে হয়, বাইকের দুনিয়ায় সবচেয়ে অজ্ঞদেশে বাস করছি আমরা। আফসোস, সরকারের গোঁড়ামি/অজ্ঞতার কারণে আমরা ABS সুবিধাটা এখনও পাচ্ছি না। মোটরসাইকেল নিয়ে যারা নীতিমালা করে, তাদের একজনও মোটরসাইকেল নিয়মিত চালান কিনা আমার সন্দেহ হয়। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ১২৫ সিসির উপর সকল বাইকেই অতি সাম্প্রতিক সময়ে ABS সংবলিত বাইক উৎপাদনের নির্দেশ দিয়েছে।

 antilock breaking system abs


 বাইক খুব নাজুক বলে এতে ABS আনা আরও আগে থেকেই দরকার ছিল, তাতে মোটরবাইকের দূর্ঘটনার শতকরা ৯০ ভাগ কমানো যেত। ঝড়ে যেত না, এতগুলো তাজা প্রাণ। ২০০% এর বেশী ট্যাক্স এর বোঝা দিয়ে ভালো বাইকগুলোকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে রেখে নিন্মমানের বাইক কেনাতে বাধ্য করা হচ্ছে। সামনে বর্ষাকাল, অনেক বাইক দূর্ঘটনা হবে, আরও অনেক প্রাণ যাবে। তবু কারও টনক নড়বে না। 

কারণ এদেশে বাইকের দূর্ঘটনার হলেই আমারা বাইকারের দোষ দেই। অথচ বুঝতে চাই না আসল কারণটা কী? প্রতিটা সময় বাইক চালানোর সময় আমাদেরকে রাস্তার দিকে খেয়াল রাখতে হয়। রাস্তাটা কেমন, কীভাবে ব্রেক করলে চাকা স্লিপ করবে না, এই চিন্তা সবসময় মাথায় রাখতে হয়। এভাবে সবার অসচেতনতা আর সরকারের অজ্ঞতার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলছি আমরা।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Keeway Matrix

Keeway Matrix

Price: 0.00

Keeway Flash

Keeway Flash

Price: 0.00

Keeway Fact Evo 125

Keeway Fact Evo 125

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Bajaj Pulsar NS150

Bajaj Pulsar NS150

Price: 0.00

Bajaj Pulsar 400

Bajaj Pulsar 400

Price: 0.00

CFMoto 300SS

CFMoto 300SS

Price: 510000.00

View all Upcoming Bikes