আমি ইকবাল খন্দকার । আমি একজন প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক । আমি বর্তমানে সাভার বসবাস করি । আমি একটি Hero Splendor Plus বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার এই Hero Splendor Plus বাইকটির ব্যপারে আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Hero Splendor Plus বাইকটি আমি ৪৫ হাজার কিলোমিটার রাইড করেছি আর সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমি আজ আমার এই বাইক এর ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Click To See Hero Splendor Plus Price In Bangladesh
আমি আমার Hero Splendor Plus বাইকটি ২০১০ সালে ৭৬ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করি । এবং এই ১০ বছর ধরে ব্যবহার করছি । আমি আমার প্রথম জীবনে বাইক চালানো শিখি আমার এক বন্ধুর বাইক দিয়ে, এরপর আস্তে আস্তে বাইকের প্রতি আমার একটা ভালবাসার জন্মায় ।
শিক্ষকতা চাকরি করার জন্য আমাকে প্রতিদিন প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে যেতে হয় আবার আসতে হয়, অনেক কিছু বিবেচনা করে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখে সাভার বাজার এর একটি হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেল শো-রুম থেকে Hero Splendor Plus বাইকটি ক্রয় করি ।
Hero Splendor Plus বাইকটি কেনার মূল কারণ ছিল এর মাইলেজ, এবং আমি যাতে এটা অনেকদিন ব্যবহার করতে পারি এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমি Hero Splendor Plus 100 সিসির বাইকটি ক্রয় করি ।
বাইকের ফিচারগুলো সম্পর্কে বলতে গেলে Hero Splendor Plus বাইকটিতে সেল্ফ স্টার্ট নেই । শুধুমাত্র কিক স্টার্ট এর সাহায্যে স্টার্ট করতে হয় তবে আমি আজ পর্যন্ত এখনো ১ কিক এর বেশি সকালবেলায় দিতে হয়নি ।
Click To See All Hero Bike Price In Bangladesh
যদিও আমার গাড়িটি ১০ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেছে। এই বাইকটি আমার এই ৪৫ হাজার কিলোমিটার চালানোর মধ্যে আমি এখন পর্যন্ত একবার ক্লাস প্লেট পরিবর্তন করেছি তাছাড়া ইঞ্জিন এর কোথাও কোনো কাজ করাতে হয়নি।
আমি আমার বাইকটির প্রথম ৪০০ কিলোমিটার এ ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি পরবর্তী ৬০০ কিলোমিটার আর এখন পর্যন্ত প্রতি ৮০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি ।
২০১০ সালে হিরো হোন্ডা প্রতিটি বাইক এ তিনটি করে ফ্রি সার্ভিসিং দিয়ে থাকতো আমি প্রতিটি সার্ভিসিং সময় মত করে থাকি । আমি আমার বাইকে নিয়মিত সার্ভিসিং করাই এবং ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । খুব ভালো পার্ফরমেন্স দিচ্ছে এখনো ।
আমি আমার বাইকটি নতুন অবস্থায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার মাইলেজ পেতাম এখন ১০ বছর পরও প্রায় ৪৮ কিলোমিটার এর মতো মাইলেজ পাই যদিও এটা আমার স্টক ইঞ্জিন ।
এখন পর্যন্ত আমি আমার বাইকে বেশ কিছু জিনিস বা পার্টস পরিবর্তন করেছি তার মধ্যে প্রথমেই বলে রাখি ২০১৬ সালের দিকে আমার ছোট ভাই আমার বাইকটি নিয়ে বড় ধরনের একটি দূর্ঘটনায় পরে । ওই সময় মোটরসাইকেলে প্রায় সামনের হেডলাইট মিটার বাম্পার এগুলো অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হয়েছিল তাছাড়া এখন পর্যন্ত ইঞ্জিন এর পিস্টন পরিবর্তন ছাড়া অন্য কোথাও কোনো একটি নাট পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হয়নি ।
Click To See All Bike Price In Bangladesh
আমি বাইকে ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি Motul মিনারেল 10w30 গ্রেডের । Hero Splendor Plus বাইকটি দিয়ে আমার সর্বোচ্চ স্পীড এখন পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় ।
Hero Splendor Plus বাইকটির কিছু ভালো দিক–
- বাইকের ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী এর মেন্টিনেন্স খরচ খুবই কম
- লং রাইডে ইঞ্জিন হিট হয় না
- সামনে-পিছনে ড্রাম ব্রেক খুবই কার্যকরী
- মাইলেজ সব সময় ৫০ এর উপরে পাবেন
- বর্তমানে ৯৫ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে সব চাইতে বেস্ট বাইক যারা দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চান তারা কিনতে পারেন
- এই বাইকের রিসেল ভ্যলু অনেক ভালো আপনি যে কোন সময় বিক্রি করে দিতে পারবেন
Hero Splendor Plus বাইকটির কিছু খারাপ দিক–
- হেড লাইট এর আলো অনেক কম এবং এক্সিলারেশন কমিয়ে দিলে লাইটের আলো কমে যাবে এটি খুবই খারাপ
- সেল্ফ স্টার্ট থাকলে ভাল হত
- এন্টিকেটর সুইচ এবং হেডলাইট এর সুইচ গুলো বেশি কমফোর্ট ফিল করবেন না তবে এগুলোর গুণগত মান অনেক ভালো 10 বছরেও এখন পর্যন্ত কিছু হয়নি
- স্পোক রিং হওয়ার কারণে এখন চাকায় জেল করা যায় না
- পিছনের চাকা টা আরো একটু মোটা হলে ব্রেক করে বেশি কনফিডেন্স পাওয়া যেত
আমি আমার এই ১০ বছরের পুরানো মোটরসাইকেলটি দিয়ে বহুৎ জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছি, এর মধ্যে ফরিদপুর, খুলনা, সাজেক ভ্যালি, কক্সবাজার, শেরপুর আরো বহু জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছি লং ড্রাইভে আমাকে কখনোই হতাশ করেনি বা পাওয়ার লস করেনি ।
Hero Splendor Plus বাইকটি আমার সাধ্যের মধ্যে সবটুকু সুখ। আমি আমার এই বাইকটি ১০ বছর ধরে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই ব্যবহার করছি । আমার এই ১০ বছরে Hero Splendor Plus বাইকটি নিয়ে অভিজ্ঞতাটি এতক্ষন ধরে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
Click To See All User Review Article
লিখেছেনঃইকবাল খন্দকার
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।