করোনাভাইরাস পরিস্থিতি তীব্র হওয়ার সাথে সাথে আমারা সবাই কিভাবে সুস্থ থাকতে পারি সেটা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত। আমরা বাইকাররা অনেকেই ডায়েট করতে চায়, কিন্তু ব্যস্ততার কারনে আমার মতো অনেকের এই ডায়েট মেইনটেইন করা হয় না। যেহেতু এখন আমরা অধিকাংশ বাইকাররাই বাসায় তাই এই সময়টাতে এই ডায়েটগুলো মেনে নিজের এবং নিজের পরিবারের অন্য সদস্যদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক বেশি বৃদ্ধি করতে পারবেন।
করোনাভাইরাস এর জন্য এখনো কোন ওষুধের সন্ধান পাওয়া যায় নি, তবে ইমিউন সিস্টেমকে ভালোভাবে কার্যকর রাখার উপায় রয়েছে যা আপনাদের সুস্থ রাখতে এবং এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস, ভাল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, মেডিটেশন করা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মূল চাবিকাঠি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক Tedros Adhanom Ghebreyesus বলেছেন, “একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন, যা আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।”
করোনাভাইরাস এর সময় প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আপনাকে আপনার খাবারের প্লেট সব সময় পুষ্টিকর উপাদন থাকতে হবে। কারণ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাজ করার জন্য শরীরে নিয়মিত পুষ্টি সরবরাহ করতে হয়।
Nutrition Consultant এর মতে শাকসবজি ও ফল খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি আমাদের এই সময় খাওয়া খুব বেশি প্রয়োজন।
মানবদেহ শতকরা প্রায় ৭৫% শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি হয় এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা জরুরি।
যেহেতু আমরা এইরকম পরিস্থিতিতে আমরা সবাই কম বেশি ঘরে অবস্থান করছি এবং তৃষ্ণার্ত বোধ করি না, সেজন্য হাইড্রেটেড সঠিক রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে আমাদের ঠাণ্ডা পানি এবং আইসক্রিম এড়ানো উচিত। এর পাশাপাশি হালকা গরম পানি পান করা এবং গারগল করা উচিৎ।
পুষ্টিবিদদের মতে আমাদের খাবারের প্লেটটি সবুজ শাকসবজি এবং ফল দিয়ে ভরা থাকা উচিৎ। সেই সাথে নিয়মিতভাবে অন্যান্য ভিটামিনের সাথে ভিটামিন সি, ডি, আয়রন গ্রহণ করা উচিৎ।
Also Read: করোনাভাইরাস- প্রতিরোধে বাইকারসহ সকলে বাড়ি ফিরে যা করবেন
কমলা, আপেল, পেঁপে, আনারস, মাল্টা, লেবু, টক ফলগুলিতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমানে থাকে। তাই আমাদের এখন বেশি বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে।একজন মানুষকে অবশ্যই নিয়মিত দুধ এবং এই জাতীয় দুগ্ধজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে, কারণ সেগুলি ভিটামিন ডি এর সর্বোত্তম উৎস। ভিটামিন সি এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি ও আমাদের জন্য প্রয়োজন।
কলা, তরমুজ এবং আপেল আয়রনের ভাল একটি উৎস, যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। প্রক্রিয়াজাত করা খাবার এড়ানো ভাল, কারণ এগুলি মানবদেহের জন্য খারাপ। তেলযুক্ত বা অতিরিক্ত ভাজাযুক্ত খাবারগুলো আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থাটিকে বাধাগ্রস্থ করে। সবাইকে অবশ্যই মাংস, মাছ এবং ডিমের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা বিশ্বের লোকেরা ঘরে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন অবস্থায় নিজেকে সুস্থ রাখতে আমাদের অবশ্যই ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, বাসায় যদি ট্রেডমিল থাকে ট্রেডমিলের উপর দিয়ে চলাচল করা, আর যদি বাসা বড় হয়ে থাকে তাহলে বাসার মধ্যে হাঁটতে হবে। আশাকরি এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি নিজে এবং আপনার পরিবার সুস্থ থাকবে।
তথ্য সূত্রঃ Nutrition Consultant Farzana Ahmed
One comment
Pingback: করোনাভাইরাস- মানসিক চাপ সামলানোর জন্য বাইকারদের করনীয়