Review Overview
বাইকের পাজেরো হিসেবে একটা কথা প্রচলিত এই ইয়ামাহা ফেজার এফআই সম্পর্কে। দেখতে জোস, ডুয়েল হেডলাইট, স্টানিং লুক এন্ড ডিজাইন আর বড়সড় গেটআপ একে আসলেই একটা লেভেলে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স টা আসলে কেমন? টেকনিকাল স্পেসিফিকেশন স্কিপ করে রিয়েল লাইফ এক্সপেরিয়েন্স নিয়েই আজকের এই রিভিউ।
ইয়ামাহা ফেজার এফআই এর কথা আসলেই যেটা প্রথমেই বলতে হয় এর কমফোর্ট। ক্রুজার বাইক গুলোর পরে এর কমফোর্ট হচ্ছে বেস্ট। বাইকের হাইট, এর সিটিং পজিশন আপনাকে যেমন কমফোর্ট দেবে সিটি রাইডে তেমনি হাইওয়েতে। শুধু রাইডার নয়, পিলিয়ন কমফোর্ট ও অনেক ভাল। ব্যাক পেইন নেই, হাতে পায়ে প্রেশার নেই, সিটিং পজিশন জাস্ট অসাম ফর রাইডার এস ওয়েল এস পিলিয়ন। লম্বা সময় ড্রাইভ করলেও টায়ার্ড লাগবে না।
>>ইয়ামাহা ফেজার এফআই এর সর্বশেষ মূল্য জানতে এখানে ক্লিক করুন<<
এফআই ইঞ্জিন নিয়ে অনেকের মাঝে কনফিউশন থাকলেও আসলে লেটেস্ট টেকনোলজি হিসেবে এটা ছিল মানানসই। আগের ইঞ্জিনের তুলনায় সামান্য কম পারফর্মেন্স হলেও এর মাইক্রোর মত তেল খাওয়া প্রবলেম সলভ হয়েছে, সাথে পরিবেশ উপযোগী হয়েছে। এফ আই এর ডিউরাবিলিটি ভাল, লং লাস্টিং এবং ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট।
ইয়ামাহা ফেজার এফআই এর এ্যারোডায়নামিক ডিজাইন আর আর সামনে ডুয়েল হেডলাইট স্পেস এর জন্য বাতাসের বিপরীতে ভাল সাপোর্ট পাবেন। বাতাস কেটে যায়। বাইক একদম কাত করে ফেলা যায়। কর্নারিং করতে পারবেন খুব সহজে। কাত করে আবার সোজা করে ফেলা – খুব ভাল ব্যালেন্সিং দিবে। ব্যালেন্সিং এক কথায় অসাধারন।
এর আসাধারন ব্যালেন্সিং এর একটা কারণ এর ব্রেক। গাড়ির ডিজাইন এর সাথে এমনভাবে ব্রেকিং সিস্টেমটা মানান সই যে আপনার কফিডেন্স লেভেলই থাকবে অন্যরকম। সামনের হাইড্রোলিক সাথে পিছনের ড্রাম ব্রেকের কম্বিনেশনে – অসাধারন ব্রেকিং হয়। ঠিকমত ব্রেক করতে পারলে গাড়ি কন্ট্রোলে আনা কঠিন কিছু না। আর পিছনের মোটা গ্রিপের চাকা তো আছেই। মোটা চাকার জন্য স্কিড প্রব্লেম নেই, ভাল স্টাবিলিটি এবং খারাপ রাস্তায়ও ভাল পারফর্মেন্স পাবেন।
>>ইয়ামাহা ফেজার এফআই এর ফিচার রিভিউ এর জন্য এখানে ক্লিক করুন<<
এর ডুয়েল হেডলাইট রাতের বেলা বাড়তি সুবিধা দিবে, তবে স্টক লাইট চেঞ্জ করে ৫০০০ লুমেন এর ভালো এলইডি লাইট লাগাবেন। পিছনের মনোশক আর সামনের টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন বেশ আরামদায়ক। ছোট খাট ঝাকি অনুভূত হয়না তেমন ভাবে। খারাপ রাস্তায় ভালই পারফর্ম করে।
আকর্ষনীয় লুকিং, অস্থির কমফোর্ট, সেইরকম ব্যালেন্স, ইফিসিয়েন্সট ইঞ্জিন, অস্থির ব্রেক, ডুয়েল হেডলাইট – সবই ভাল? না ভাই, অনেক ঝামেলাও আছে। এবার সেইখানে আসি।
ইয়ামাহা ফেজার এফআই এর খারাপ দিকঃ
বিল্ড কোয়ালিটি খুব ভালও না আবার একেবারে বাজেও না। তবে ৩ লাখ সেগমেন্টে আরও ভাল হওয়া উচিত ছিল। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম, ব্রেকিং পিরিয়ড টাইমে বেশ কিছু ঝামেলা করে,যেমন বাজে ইঞ্জিন সাউন্ড, কম মাইলেজ এইসব। যদিও এগুলো সাময়িক। ডুয়েল হেডলাইট হলেও স্টক লাইট ভাল না, ফোকাসিং বাজে, ৫০০০ লুমেন এর ভাল লাইট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম এর জন্য দুইজন নিলে কিংবা উচু স্পিড ব্রেকারে বাধতে পারে। বিষয়টা বিরক্তিকর। পুরোটাই ইলেকট্রিক সিস্টেম , ডুয়েল হেডলাইট, এএইচও এবং কিক লেস হওয়ায় ব্যাটারি দ্রুত ড্রেইন হয়। ব্যাটারি টাও ছোট। বড় ব্যাটারি দেয়া উচিত ছিল। এ এইচও অফ করে নিতে পারেন এজন্য।
>>ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের শোরুমের ঠিকানা জানতে এখানে ক্লিক করুন<<
এফ আই ইঞ্জিনের জন্য পারফর্মেন্স কিছুটা কম। রেডি পিকআপ অন্য বাইকের মত না, স্পিড উঠতে সামান্য বেশি সময় নেয়, এটা যদিও ফুয়েল ইফিসিয়েন্ট কিন্তু রেডি পিকআপ দেয়া উচিত ছিল। ইঞ্জিন সাউন্ড ব্রেকিং পিরিওড টাইমে সিএনজি এর মত ছিল, বাইকও স্মুথ ছিল না, ৫০০০ কিলোর পরে ঠিক হয়ে গিয়েছে। লোড ক্যাপাসিটি কম। ১৪০ কেজির বেশি নিলেই গাড়িতে লোড পড়ে, সেটা ফিল করা যায়। বাজে ফুয়েল নিয়ে গাড়ির মাথা ঘুরাতে থাকে, নানান ঝামেলা শুরু করে। ফুয়েল নিতে হয় ভাল জায়গা থেকে ।
ইলেকট্রিক ডিজিটাল মিটার, এক্সাক্ট ফুয়েল এমাউন্ট শো করে না। বেশ তেল থাকতেই লো ফুয়েল দেখায়। ফলে এক্সাক্ট মেজারমেন্ট একটু কঠিন। যদিও এটা খুব একটা সমস্যা না যদি না আপনি মেপে মেপে গাড়ি চালান। টপ স্পিড ছিল আমার ১১০ কিমি/ঘণ্টা, তবে হ্যা হয়ত ১২০ তোলা যেত। এটা নির্ভর করে চালানোর উপর। টপ স্পিড তোলার কিছু ব্যাপার আছে। মোটামুটি মেইনটেন করে চালালে ১২৫ এর উপরে মনে হয়না উঠবে। রিসেন্ট মডেলে চেইন প্রবলেম নেই।
এই ছিল রিভিউ। বাইক চালানো ভেদে, ড্রাইভিং স্টাইল ভেদে কিছু জিনিসের উপর দ্বিমত থাকতেই পারে। সবসময় হেলমেট পরে বাইক চালাবেন এবং লং রোডে বা ট্যুরে সেফটি গিয়ার ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ। হ্যাপি রাইডিং।
লিখেছেনঃ মাহামুদুর রহমান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যমে আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।